ঢাকাবুধবার , ২৪শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আবহাওয়া
  3. আমাদের পরিবার
  4. আর্ন্তজাতিক
  5. ইসলামী জীবন
  6. এনায়েতপুর
  7. কক্সবাজার
  8. করোনা আপডেট
  9. খেলাধুলা
  10. চাকরি-বাকরি
  11. জাতীয়
  12. নাগরিক সংবাদ
  13. পাঁচমিশালি
  14. বরিশাল বিভাগ
  15. বাংলাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

বৈশ্বিক মহামারি ও রাজনীতি: শরদিন্দুর ছোট গল্প থেকে শিক্ষা

যুগের কথা ডেস্ক
জুলাই ৯, ২০২০ ৯:২২ পূর্বাহ্ণ
Link Copied!

অনলাইন ডেস্ক

শুধু গোয়েন্দা চরিত্র ব্যোমকেশ বক্সীর জন্যই বিখ্যাত নন শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়, এ বাংলা সাহিত্যিক জনপ্রিয় হয়েছেন তার অসামান্য আরো কিছু ঐতিহাসিক উপন্যাস ও ছোট গল্পের জন্য। মহামারির আক্রমণ, বৈশ্বিক রাজনীতি, মারণাস্ত্র প্রতিযোগিতা-এসব বিষয়বস্তুও উঠে এসেছে তার গল্পে। নভেল করোনাভাইরাসকে কেন্দ্র করে তার একটি গল্প নিয়ে আলোচনা করেছেন ভারতের দুই সমালোচক মল্লারিকা সিনহা রায় এবং বৈদিক ভট্টাচার্য। ভারতের ইংরেজি নিউজসাইট দ্য ওয়্যার থেকে সেটি অনুবাদ করেছেন গৌরাঙ্গ হালদার

 

শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছোটগল্প ‘শাদা পৃথিবী’ (১৯৪৬) শুরু হয় একটি ভয় ধরানো নাটকীয়তা দিয়ে। দৃশ্যপট লন্ডনে। প্রধান চরিত্র স্যার জন হোয়াইট। হোয়াইট ছিলেন তাঁর সময়ের শীর্ষস্থানীয় বিজ্ঞানী ও দার্শনিক।

৬ আগস্ট, ১৯৪৬ সাল। স্যার জন রাত তিনটার দিকে হঠাৎ একটি বিভ্রান্তিকর ধাঁধার সমাধান খুঁজে পান। যে ধাঁধা তাঁর জীবনের আটটি বছরের প্রায় সবটুকু কেড়ে নিয়েছিল। স্যার জনের মাথায় “সহস্র আণবিক বোমার অসহ্য আলোকের মতো” একটি দুর্দান্ত ভাবনা ঝিলিক দিয়ে যায়। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে তিনি একজন ব্রিটিশ কনজারভেটিভ সাংসদকে ফোন করেন।

কাঁপা কাঁপা গলায় তাকে বলেন, শেষ পর্যন্ত “আমি মানুষের মুক্তিপথ খুঁজে পেয়েছি – শাদা মানুষের মুক্তিপথ খুঁজে পেয়েছি”।৫ জানুয়ারি ১৯৪৭। “মধ্যম শ্রেণির একটি টোরি পত্রিকা” সেই মুক্তিপথের পরিকল্পনা নিয়ে একটি উপসম্পাদকীয় প্রবন্ধ ছাপে। সেখানে সাদা লোকদের মঙ্গলের জন্য একটি শয়তানি প্রকল্প প্রস্তাব করা হয়।

প্রবন্ধটি পৃথিবীর ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যাকে মানবজাতির জন্য সবচেয়ে বড় হুমকি হিসেবে শনাক্ত করে। প্রবন্ধটির লেখক ম্যালথাসবাদ ও সামাজিক সুপ্রজননবিদ্যার ভিত্তিতে একটি বাহাস উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, সাদা জাতির নিরবিচ্ছিন্ন উন্নতি ও “যোগ্যতমের টিকে থাকা” নিশ্চিত করার জন্য, অন্য সকল জাতিকে বর্জন করা অপরিহার্য হয়ে উঠছে। যেমন ধরুন, “কৃষ্ণ, পীত, বাদামি, মিশ্র”।

পত্রিকাটির বেশিরভাগ পাঠক, প্রবন্ধটিকে প্রাথমিকভাবে উদ্ভট কল্পনা ধরে নিলেও, বিষয়টি আর কেবল উদ্ভট কল্পনা হিসেবে থাকেনি। আসলে প্রকল্পটি ইতিমধ্যেই কাজ শুরু করে দিয়েছিল। প্রথম ঘটনাটা ঘটে আমেরিকায়। ১৯৪৮ সালের ২৫ জুন। একটি দীর্ঘ সংগ্রামের পর, আমেরিকার কালো জনগোষ্ঠী তাদের নিজেদের রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় সক্ষম হয়। রাষ্ট্রটির অবস্থান অ্যারিজোনা ও মেক্সিকো’র মাঝখানে। তারা একে ডাকতো মেক্সারিজ বলে।

ভাগ্য নির্ধারণের ওই দিনটাতে, একটা নামহীন বিমান আণবিক বোমা নিয়ে উড়ে যাচ্ছিল। দুর্ঘটনাবশত বিমানটি মেক্সারিজের রাজধানীতে ভেঙে পড়ে এবং বোমার বিস্ফোরণ ঘটে। ফলাফল হিসেবে রয়টার্সের সাংবাদিক বলেন-রাজধানীর সকল বাসিন্দা মারা গেছে।

এই একই ধরনটির পুনরাবৃত্তি ঘটে দক্ষিণ আফ্রিকায়। বর্ণ (Race) প্রশ্নের সমাধান এবং ব্রিটিশ জনগণকে শক্তিশালী করার রাজনৈতিক পদক্ষেপ হিসেবে, দেশের সেটেলার সাদা জনগণের জন্য অস্ট্রেলিয়ায় নতুন আবাস নির্দেশ করা হয়।

তবে সাদারা দক্ষিণ আফ্রিকা ত্যাগ করার পরে, স্থানীয় কালো জনগোষ্ঠী একটি অচেনা মহামারির কবলে পড়ে মারা যেতে থাকে। প্রায় একই সময়ে, দক্ষিণ আমেরিকায় সংবাদ সংস্থাগুলো একটি অজানা ভাইরাসের প্রাদুর্ভাব নিয়ে প্রতিবেদন দেয়া শুরু করে। তারা বলেন যে, আক্রান্ত শরীরে কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না কিন্তু প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মারা যায়।

ধীরে ধীরে এবং অব্যর্থ ভীতির সঙ্গে সেই বৈশ্বিক মহামারি ছড়িয়ে পরে অ-সাদাদের জগতেও। মারা যায় লাখ লাখ মানুষ। চীন, বার্মা, ফিলিপাইনসহ অসংখ্য দেশ গণ-চলাচল আটকে দিয়ে এবং কঠোর সঙ্গ-নিরোধের ভেতর দিয়ে মহামারির বিস্তার ঠেকানোর চেষ্টা করে। ভারতও এর ব্যতিক্রম ছিল না।

উপমহাদেশে সাদাদের মহামহিম সরকারের ক্রমাবনতি এবং স্বাধীনতা অর্জনের পরে, প্রায় সব সাদা নর-নারী দেশত্যাগ করে। এর প্রায় অব্যবহিত পরে, ১৯৪৯ সালের ৭ জুন, অজ্ঞাত রোগে প্রথম মৃত্যুর ঘটনা ঘটে কলকাতায়। কয়েক দিনের মাঝে আতঙ্ক এবং ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ে দাবানলের মতো। স্বাধীন ভারতের (শরদিন্দু’র ভাবনায় অবিভক্ত ভারতের) নাগরিকেরা মশা মাছির মতো মারা যেতে থাকে।

স্যার জনের উদ্দীপনা সঞ্চারী “মুক্তিপথের” ঠিক চার বছর পরে, ৬ আগস্ট ১৯৫০ সালের মাঝে, এই অজানা মহামারির কারণে পৃথিবীর সকল অ-সাদা জাতগুলো নিশ্চিহ্ন হয়ে যায়। তবে এর মাঝেই, ১৯৪৯ সালে স্যার জন নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হন। ৮৩ বছর বয়সে।

শরদিন্দু’র গল্প বৈশ্বিক মহামারি ও রাজনীতির মাঝে সম্পর্ক নিয়ে পুনরায় আমাদের ভাবতে বাধ্য করে।

কিছু গবেষণা যেমন দেখিয়েছে, এটি অবশ্যই একটি দীর্ঘ ইতিহাস। মিশেল ফুকো তাঁর বক্তৃতামালায় (Abnormal 1974-75) দেখান যে, মধ্যযুগ ও উনিশ শতকের মাঝে ইউরোপে প্লেগ মহামারি সামাল দেয়ার ব্যবস্থা কীভাবে আধুনিক রাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় চেহারা তৈরি করে দিয়েছে। বিশেষ করে, স্বতন্ত্রায়িত ব্যক্তি ও নজরদারির বিস্তৃত কলকবজা বা মেকানিজমগুলো।

ডেভিড আর্নল্ড তাঁর ‘কলোনাইজিং দ্য বডি’ (১৯৯৩) গ্রন্থে বাহাস করেছেন, আমাদের ঘরের কাছেই এই তারতম্যগুলোর জ্বলজ্বলে দৃষ্টান্ত রয়েছে। যেমন ধরুন, ১৮০০ থেকে ১৯১৪ সালের মাঝে ভারতে ঔপনিবেশিক রাষ্ট্রের আদল বদলে যাওয়া। সে সময়ে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়া গুটিবসন্ত, কলেরা ও প্লেগের মতো মহামারির ক্ষেত্রে রাষ্ট্রের ভূমিকা, রাষ্ট্রের চেহারা পাল্টে দেয়। একই সঙ্গে তা ঘটে ঐতিহ্যবাহী চিকিৎসা পদ্ধতি থেকে আলাদা গণ-চিকিৎসার ধারণা বিস্তার দ্বারাও।

বৈশ্বিক মহামারির অতি সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতায়, দু’টি রাজনৈতিক প্রশ্ন এখন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে প্রেতাত্মার মতো তাড়া করছে। একটি হচ্ছে নিরাপত্তা ও নজরদারি। অন্য প্রশ্নটি বাজার অর্থনীতিকে কেন্দ্র করে ঘুরপাক খাচ্ছে।

২০০৪ সালে সার্স (SARS)  রোগের হুমকির ফলে, রোগ জীবাণু সৃষ্টির জন্য কেবল নির্দিষ্ট জাতির উপর দোষ চাপানোর মতো পক্ষপাতিত্বই প্রকাশ পায়নি, তাদের আলাদা বা “আদার” করে দেয়ার মতো ঘটনাও  প্রকাশ পায়। একই সঙ্গে, জীবাণু ছড়িয়ে পড়ার হুমকি মোকাবিলার নামে রাষ্ট্র তাদের চিকিৎসা-অযোগ্য বলে সামাজিকভাবে বর্জনের পাশবিক সিদ্ধান্ত নেয়। আমেরিকায় সার্স হুমকির সময়ে চাইনিজ-আমেরিকান জাতিগত নির্দিষ্টকরণ সবচেয়ে পুরোনো ঘটনা। তখন প্রতিহিংসাবশত আমেরিকার শহরগুলোতে চীনা অধ্যুষিত এলাকাগুলো বিপজ্জনক মনে করে আলাদা করা হয়। এটি উনিশ শতকের বৈশ্বিক মহামারির একটি প্রতিচ্ছবি।

নিরাপত্তায়নের প্রক্রিয়া কাজ করে সম্ভাব্য হুমকি ধ্বংস করা নীতির ভিত্তিতে। সেটা বাস্তবায়িত হয় সীমান্ত নিয়ন্ত্রণে শক্তিশালী নজরদারির ভেতর দিয়ে। বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিন ও বিচ্ছিন্ন করার ভেতর দিয়ে।  (বিশেষ করে সন্দেহভাজন জাতিগুলোর কাছ থেকে আসা পণ্য ও মানুষ চলাচলের ক্ষেত্রে। একে পড়ুন তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলো থেকে উন্নত দুনিয়ায় চলাচল হিসেবে। পড়ুন পশ্চিমা দেশ হিসেবে। ভৌগোলিকভাবে তার অবস্থান যেখানেই হোক না কেন। )

তবে নিরাপত্তা ব্যবস্থার মাঝে সহজাতভাবে থাকা ছকের এই হিসাব নিকাশ, বৈশ্বিক মহামারি নিয়ন্ত্রণে যথেষ্ট হতে পারে না।

আর্থিকভাবে সংকটাপন্ন অভিবাসী জনগণের মানবাধিকার অস্বীকার রাষ্ট্র ক্ষমতাকে আরো শক্তিশালী করে। চিকিৎসা সংক্রান্ত পদক্ষেপ ও কার্যকর জনস্বাস্থ্য নীতির অনুপস্থিতি এবং রাষ্ট্র ক্ষমতার এই প্রসারণ, জাতীয়ভাবে জনগণের মাঝে পশ্চিমের “যার যার তার তার” অবস্থা ছেড়ে যায়। এটি “দুর্ঘটনাবশত” রোগের বিস্তারের জন্য একেবারেই উন্মুক্ত।

শাসন প্রক্রিয়ায় ক্রমবর্ধমান শক্তিশালী সামরিক-শিল্পায়ন ব্যবস্থার বেসামরিক নাগরিক হিসেবে, আমরা আমাদের দীর্ঘ অভিজ্ঞতা থেকেই জানি যে, নিরাপত্তা হুমকিতে দুর্ঘটনাবশত বিচ্যুতি বিরল নয়।

বাজার অর্থনীতির প্রশ্নটি সরাসরি শ্রমজীবী জনগণের কঠোরতর নিয়ন্ত্রণের সঙ্গে সম্পর্কিত।

আমাদের সমকালীন পৃথিবী সস্তা শ্রমের আন্তর্জাতিক চলাচলের উপর নির্ভরশীল। ইতিহাসবিদ টিম মিশেল একে বলেন “কার্বন ডেমোক্রেসি”। এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় শ্রমের স্থানান্তরে তেল যেহেতু প্রাথমিক জ্বালানি, তাই তেলকেন্দ্রিক সহিংসতা ফিন্যান্স পুঁজির প্রসারে একদম সঠিকভাবে আনুপাতিক। চলমান বৈশ্বিক মহামারিজাত “লকডাউন” এর ভাষায়, এই চলাচল এখন একদম থমকে গেছে। বৈশ্বিক মহামারির অলঙ্ঘনীয় আতঙ্কের সঙ্গে প্রবল শক্তিধর বাজার অর্থনীতির মুখোমুখি সংঘর্ষের ফলে, বিশ্ব অর্থনীতি এখন ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গেছে।

যখন কোনো দেশের উপকূল থেকে গরিবের শ্রমের বিক্রি ও চলাচল বন্ধ হয়ে যায়, দশকের পর দশক ধরে জনস্বাস্থ্য খাতের লগ্নি তুলে নেয়া, বৈজ্ঞানিক গবেষণায় কৃচ্ছতার নীতি, অথবা জনগণের জীবনমানের দায়িত্বে থাকা রাষ্ট্র, এই সবকিছু তখন নাই হয়ে যায়। আর যদি শ্রমের মালিক শ্রমিকেরা মারা যায়, অবস্থা হয় আরো ভয়াবহ। “লকডাউনের” সময়ে উৎপাদনশীলতা ও বাজার অর্থনীতির স্বাধীনতা বিভ্রম টিকে থাকতে পারে শুধু ক্ষণিকের জন্য। কোম্পানিগুলোর সি.ই.ও’দের দেয়া দান খয়রাত হিসেবে। অর্থনৈতিক মহামন্দার সময়ে এদের কিন্তু ত্রাণ দিয়েই মুক্ত করা হয়েছিল। আবার এরাই এখন মানবিক পদক্ষেপ নিতে চিৎকার করছে।

যাই হোক, যারা “অমুক দেশকে আবার মহান করুন” স্লোগান দিয়ে, ইতিমধ্যেই নাক গলানো “মুক্ত” বাজারের কলকাঠি নাড়তে ক্ষমতায় এসেছিল, সেই সব নেতাদের সুরক্ষাবর্মের ব্যাপারে বৈশ্বিক মহামারি থোড়াই কেয়ার করে।

যেহেতু “প্রবল প্রতিরোধশক্তি”র প্রবক্তারাই বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে যেতে বাধ্য হয়েছেন, এটা আসলে অপুষ্টিতে আক্রান্ত বদ্ধ জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রচণ্ড চিৎকার। অন্তত বাঁচার আশার জন্যে হলেও মুক্ত বাতাসের জানালাগুলো খোলা রাখা দরকার ছিল।

শরদিন্দু’র গল্প আরেকটি সম্ভাব্যতার দিকেও ইঙ্গিত দেয়।

কভিড-১৯ পরবর্তী রাজনৈতিক জীবন সম্পর্কে যেহেতু আমরা উদ্বিগ্ন, শাসন ব্যবস্থার উদীয়মান টেকনিকের ভেতরে আমাদের নেয়ার পরিবর্তে, বৈশ্বিক মহামারি খুব সহজেই রাজনীতির শেষ হিসেবে নির্দেশিত হতে পারে।

স্যার জনের মানিবাদী চিন্তার প্রকল্পে, পৃথিবী দু’টি দলে বিভক্ত। সাদা ও অ-সাদা। সেখানে অ-সাদা দলের বিনাশের মাধ্যমে সাদারা বেঁচে থাকার সুবিধা পাবে। বৈশ্বিক মহামারিতে সকল অ-সাদা জাতি সম্পূর্ণ ধ্বংস হওয়ার পরের পৃথিবীতে থাকবে না কোনো সংঘাত। কাজেই কোনো রাজনীতিও থাকবে না।

গল্পটিতে সেই উপসম্পাদকীয় লেখক পর্যবেক্ষণ করেন –

সেখানে “মানুষে মানুষে ভূমি লইয়া কাড়াকাড়ির আর প্রয়োজন থাকিবে না। বর্ণ সমস্যা থাকিবে না। অন্তত দুই হাজার বৎসরের মধ্যে মানুষের আর নির্বাণ প্রাপ্তির ভয় থাকিবে না। এই দুই হাজার বৎসরে মানুষ কি নিজেকে নূতন করিয়া গড়িয়া তুলিতে পারিবে না?” অর্থাৎ অন্তত দুই হাজার বছরের জন্য মানবজাতির ভবিষ্যৎ সুরক্ষিত হবে।

আসলে এটি একটি ভয়ংকর ভবিষ্যৎ। তবে বৈশ্বিক মহামারির মাঝে জীবনের ঘোষণা ও রক্ষণশীল কল্পকাহিনীকে আঘাত করার নিজস্ব ধরন রয়েছে।

গল্পের শেষভাগে স্যার জন লন্ডনে একটি বিরাট সমাবেশে হাজির হন। এবং তার শয়তানি প্রকল্প রক্ষায় যুক্তি দিয়ে বলেন, প্রকৃতি মানুষের দয়া ও সহানুভূতির মতো আবেগের বাইরে। প্রকৃতি কেবল যোগ্যতমের অনুকূলে থাকে।

সেই বিশাল সমাবেশে তিনি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে জানান যে, সাদা জাতির টিকে থাকার আবেদন প্রকৃতির দরবারে গৃহীত হয়েছে। এই পর্যন্ত বলে স্যার জন হঠাৎ থেমে যান এবং তার সামনে থাকা লাখ দক্ষ অ-সাদা মানুষের সামনে, মঞ্চের উপর মুখ থুবড়ে পরে মারা যান।

 

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।