মানিকগঞ্জের হাট-বাজারগুলোতে সরকার নির্ধারিত দাম উপেক্ষা করে ৫০ টাকা কেজি দরেই আলু বিক্রি হচ্ছে। সরকারের নির্ধারিত দামকে ক্রেতারা সাধুবাদ জানালেও দাম কমাচ্ছেননা ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা বলছে বেশি দামে কেনার কারণে তারা সরকার নির্ধারিত দামে তারা আলু বিক্রি করতে পারছেননা।
সরেজমিন বৃহস্পতিবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত মানিকগঞ্জের জাগীর, বাস্ট্যান্ড কাঁচাবাজার, সাটুরিয়া, বান্দুটিয়া, গোলড়া বাজার ঘুরে ৫০ টাকা কেজি দরে আলু বিক্রি করতে দেখা গেছে। জেলার বড় বড় আড়ৎ গুলোতেও আগের দামে আলু বিক্রি হচ্ছে।
বেউথা বাজারে আলু কিনতে আসা আমিনুর রহমান জানান, সরকার আলুর দাম প্রতি কেজি ৩০ টাকা নির্ধারণ করে দিলেও খুচরা ব্যবসায়ীরা ৫০ টাকা কেজিতে তা বিক্রি করছেন।
বান্দুটিয়া বাজারের আরেক ক্রেতা আলী হোসাইন জানান, টিভি ও পত্র পত্রিকায় আলুর দাম কমানোর খবর শুনেছি। তবে সরকার নির্ধারিত দামে আলু বিক্রি হচ্ছেনা।
মানিকগঞ্জ বাজারের কাঁচামাল ব্যবসায়ী ফজলু জানান, দুইদিন আগে তিনি ৬০ কেজির আলুর বস্তা ২৬০০ টাকা দিয়ে ক্রয় করেছেন। এতে কেজি পড়েছে ৪৩ টাকার একটু ওপরে। এখন সরকারী রেটে আলু বিক্রি করলে কেজিতে লোকসান হবে ১৩/১৪ টাকা।
বাসস্ট্যান্ড কাঁচামালের আড়তের ব্যবসায়ী আলী আকবর জানান, সপ্তাহ খানেক ধরে ২৪০০ টাকা বস্তা (৬০ কেজি) দামে আলু আমরা কিনে তা ২৫০০-২৬০০ টাকায় বিক্রি করেছি। এখন তো আমরা বিপদে পড়ে গেছি। গতকাল ১০০ বস্তা আলু বিক্রি করলেও আজ আলু কেনার লোক নেই।
জেলা শহরের বাসিন্দা আরিফ বলেন, ভোক্তা পর্যায়ে ৩০ টাকা কেজিতে আলু বিক্রির কথা থাকলেও খুচরা বাজারে আলুর দাম নিচ্ছে ৫০ টাকা। এতে করে সবজি বাজারে ক্রেতা-বিক্রেতাদের মাঝে কথা কাটাকাটির সৃষ্টি হচ্ছে। এই বিষয়ে যথাযথ প্রশাসনের নজরদারি বাড়ানো উচিত।
সরকারি নির্দেশনা অনুযায়ী পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি আলুর দাম ২৫ টাকা নির্ধারণ করা হলেও মানিকগঞ্জের তা বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকা দরে। যে কারণে সরকারি নির্দেশনা মানছেন না খুচরা ব্যবসায়ীরাও। এতে করে ন্যায্য বাজারদরের চেয়ে অধিক দামে আলু ক্রয় করতে হচ্ছে ভোক্তাদের। তবে কয়েকদিন পর থেকেই সরকারের নির্ধারিত দামে পাইকারি বাজারে আলু বিক্রির বিষয়টি নিশ্চিত করা হবে বলে জানান ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদফতর মানিকগঞ্জের সহকারী পরিচালক আসাদুজ্জামান রুমেল বলেন, বেশি দামে আলু ক্রয় করায় সরকার নির্ধারিত দামে পাইকারি বিক্রেতারা আলু বিক্রিতে অনীহা প্রকাশ করছে।
এব্যাপারে জেলা প্রশাসক এস এম ফেরদৌস জানান, সরকার নির্ধারিত দামেই আলু বিক্রি করতে হবে। অতিরিক্ত দামে বিক্রিকারীদের ভ্রাম্যমাণ আদালতে সাজা দেওয়া হবে।