পাবনার ভাঙ্গুড়া উপজেলা ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক (এমএলএসএস) মোঃ ইব্রাহীম হোসেনের (৪৫) বিরুদ্ধে লাখ টাকা ঘুষদাবী,নারী কেলেংকারী ও নানাবিধ অনিয়মসহ স্থানীয় সাংবাদকর্মীদের উপর মারমুখি আচারণ করে দেখে নেওয়ার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) বিকালে উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন গণমধ্যমকর্মীরা। অভিযুক্ত ইব্রাহীম উপজেলার পার-ভাঙ্গুড়া ইউনিয়নের পার-ভাঙ্গুড়া গ্রামের মৃত জয়ধর মোল্লার ছেলে।
বৃহস্পতিবার (১৯ নভেম্বর) বেলা ১১টার দিকে ভুক্তভোগী ও ভাঙ্গুড়া পৌর সদরের ৪ নং ওয়ার্ডের উত্তর সারুটিয়া মহল্লার বাসিন্দা মোঃ আব্দুল হাই গণমাধ্যমকর্মীদের নিকট ইব্রাহীমের লাখ টাকা ঘুষদাবীর অভিযোগ করেন।
ভুক্তভোগীর আব্দুল হাই জানায়,জমিজমা মালিকানা নিয়ে ২০০১ সালে যুগ্ম জেলা জজ ২য় আদালত পাবনাতে একটি বাটেয়ারা মামলা করেন মজিরন। যাহার মামলা নং- ১২০/২০০১। এবং ২৭শে মার্চ ২০১২ সালে মামলাটির রায়ও হয়। মামলার রায়কৃত নথিপত্র নিয়ে উপজেলা ভূমি অফিসে পূর্বের খারিজ বাতিল করে পূর্নরায় মজিরন অনুকুলে খারিজের জন্য যায়। এসময় অফিস সহায়ক ইব্রাহীম হোসেন তাঁর নথিপত্র দেখে কাজটি জটিল বলে মন্তব্য করেন এবং অফিসের বড় স্যারের সাথে যোগাযোগ করে কাজটি করে দিবেন মর্মে ১ লক্ষ টাকা ঘুষ দাবি করেন। তবে ভুক্তভোগী আব্দুল হাই ঝালমুড়ি বিক্রেতা হওয়ায় তাঁর চাহিদা মাহফিক টাকা দিতে বিলম্ব হয়। কিন্তু ইব্রাহিম হোসেন তাঁর দাবিকৃত ঘুষের টাকা না পাওয়ায় দীর্ঘ দুইমাস পর কৌশলে কোর্টের রায় এর কপি গায়েব করে বাকি নথিপত্র তাঁকে ফিরিয়ে দেন। পরে তিনি ভাঙ্গুড়া উপজেলা ভূমি অফিসের অফিস সহায়ক ইব্রাহীম হোসেনের বিভিন্ন অনিয়ম-দুর্নীতি ও হয়রানির বিষয়ে অভিযোগ আকারে স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীদের নিকট জানান।
বৃহস্পতিবার অভিযোগ পেয়ে ভূমি অফিসে সাংবাদকর্মীরা অভিযুক্ত অফিস সহায়ক ইব্রাহীম হোসেনের নিকট আনিতঅভিযোগ সর্ম্পকে জানতে চাইলে তিনি সাংবাদকর্মীদের উপর মারমুখি আচারণ করে তাদেরকে দেখে নেওয়ারও হুমকি প্রদান করে ইব্রাহীম। এমন সময় অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তারা এগিয়ে এসে ওই লাখ টাকা ঘুষদাবিকৃত পিওন ইব্রাহীমকে নিবৃত করেন। এসময় অনাকাক্সিখত ঘটনার জন্য গণমধ্যমকর্মীদের নিকট ক্ষমা চান অফিসের অন্যান্য কর্মকর্তারা। ঘটনার পর স্থানীয় গণমধ্যমকর্মীরা উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কাওছার হাবীব এর নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পাশাপাশি উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ আশরাফুজ্জামান কে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন গণমধ্যমকর্মীরা।
উপজেলা সহকারি কমিশনার (ভূমি) কাওছার হাবীব অভিযোগপ্রাপ্তি স্বীকার করে বলেন,বিষয়টি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সৈয়দ আশরাফুজ্জামান বলেন,গণমাধ্যমকর্মীদের সাথে অশোভন আচারণের ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। এবিষয়ে সহকারি কমিশনার (ভুমি)কে প্রয়োজীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,২০১৯ সালের ৩১শে মার্চ পার-ভাঙ্গাড়া ইউনিয়র ভুমি অফিসে থেকে দুর্নীতি ও অনৈতিক আচারণের কারণে তাঁকে উপজেলা ভমি অফিসে বদলী করে কতৃপক্ষ। যোগদানের পর থেকেই ভুমি অফিসের চিহ্নিত দালালদের সহযোগীতায় তিনি দীর্ঘদিন ধরে উপজেলা ভুমি অফিসে ভুমি খারিজ, নামজারিসহ বিভিন্ন সেবা প্রদানের নামে জনসাধারণের নিকট থেকে দপটের সাথে মোটা আঙ্কের টাকা হাতিয়ে নিচ্ছেন ইব্রাহীম। অপরদিকে সম্প্রতি স্ত্রী সন্তান থাকা সত্বেও আবার প্রকৌশলী অফিসের কাজের বুয়ার সঙ্গে অনৈতিক সর্ম্পকে জড়িয়ে পরে ইব্রাহীম। পরে চাকরি বাঁচাতে তাকেও বিবাহ করতে বাধ্য হয় লম্পট ইব্রাহীম।
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ইব্রাহীমের মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলে নাম্বার টি বন্ধ পাওয়া যায়।
মোঃ আকছেদ আলী
ভাঙ্গুড়া (পাবনা) প্রতিনিধি
মোবাইল নং- ০১৭১০-৯৮৬৪৩৫
তারিখঃ ২০/১১/২০২০ইং