কাজিপুর প্রতিনিধি : হাজারো বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঘনিষ্ট সহচর। যিনি বঙ্গবন্ধুর জীবনেরও সাথী, মরণেরও সাঁথি। সে মহানায়ক অবহেলিত উত্তর জনপদের প্রাণ পুরুষ বৃহত্তর পাবনার কৃতি সন্তান শহীদ ক্যাপ্টেন এম মনসুর আলীর ৪৬তম শাহাদাতবার্ষিকী ৩ নভেম্বর। এ জেল হত্যা দিবস ও জাতীয় চার নেতা স্মরণে নানা কর্মসূচির আয়োজন করে কাজিপুর উপজেলা আঃলীগ।
বুধবার (৩ রা নভেম্বর) সকাল ১০ টায় উপজেলা আঃলীগের উদ্যোগে একটি শোকর্যালী দলীয় কার্যালয় থেকে পৌর সভার চৌরাস্তা প্রদক্ষিণ করে উপজেলা আঃলীগ কার্যালয় চত্বরে এসে সমবেত হয়। এর পর উপজেলা স্বাধীনতা স্কয়ারে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে। এ সময় উপজেলার আঃলীগ ও তার সহযোগী সংগঠনও মোহাম্মদ নাসিম স্মৃতি সংসদের পক্ষ থেকে ফুলেল শ্রদ্ধানিবেদন করে। পরে উপজেলা আঃলীগের সভাপতি আলহাজ্ব শওকত হোসেনের সভাপতিত্বে দলীয় কার্যালয় চত্বরে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জাতীয় চার নেতার অন্যতম এম মনসুর আলীর সুযোগ্য দৌহিত্র, প্রয়াত জননেতা মরহুম আলহাজ্ব মোহাম্মদ নাসিম এর সুযোগ্য পুত্র এবং সিরাজগঞ্জ -১ কাজিপুরের সাংসদ ও কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ সভাপতি প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয়।তিনি বলেন,বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা অবিচ্ছেদ্য।
বাংলাদেশের রাজনীতিতে বঙ্গবন্ধুর একনিষ্ঠ সহচর ও সহযোদ্ধা এবং বঙ্গবন্ধু সরকারের সর্বশেষ প্রধানমন্ত্রী ছিলেন শহীদ এম মনসুর আলী। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের পরেই যাঁদের ত্যাগ, অবদান ও জীবন দান উজ্জ্বল এবং ভাস্বর, তাঁদের মধ্যে শহীদ এম মনসুর আলীর নাম বাদ দিলে বাংলাদেশের অভ্যুদয়ের ইতিহাস অসম্পূর্ণ থেকে যাবে। এই মহৎপ্রাণ শহীদ এম মনসুর আলী কখনও বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে কোন দিন বেইমানী করেন নাই। বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চার নেতা একই সুত্রেগাথা।
তিনি জাতীয় চার নেতার গুনে গুণান্বিত হয়ে তাদের আদর্শ কে ধারণ করতে এ প্রজন্মকে এবং এম মনসুর আলীর সুযোগ্য পুত্র প্রয়াত জননেতা মরহুম আলহাজ্ব মোহাম্মদ নাসিম এর আদর্শের প্রতি অবিচল থাকতে পরামর্শ দেন ।তিনি আরও বলেন ‘মীরজাফর’ খন্দকার মোশতাক আহমেদের অবৈধ সরকারের প্রতি আনুগত্য প্রদর্শন না করায় মনসুর আলীসহ বঙ্গবন্ধুর চার বিশ্বস্ত অনুসারীকে আটক করে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়। এরপর ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর কারাগারে ঘটে পৃথিবীর ইতিহাসের জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড। জেলখানার ভেতরে নৃশংসভাবে খুন করা হয় জাতীয় চার নেতা এম মনসুর আলী, তাজউদ্দিন আহম্মদ, এ এইচ এম কামারুজ্জামান ও সৈয়দ নজরুল ইসলামকে। যা জাতি কোন দিন ক্ষমা করবে না। তিনি কমিশন গঠন করে জাতীয় চার নেতাকে কারাগারে নৃশংস ভাবে হত্যার জন্য বিচারের দাবি জানান।
বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান সিরাজী। আরও বক্তব্য রাখেন, উপজেলা ভাইসচেয়ারম্যান দ্বীন মোহাম্মদ বাবলু, পৌর মেয়র আব্দুল হান্নান তালুকদার, জেলা যুবলীগের সাবেক সভাপতি আঃ হাকিম, চেয়ারম্যানদের পক্ষে সোনামুখি ইউনিয়ন চেয়ারম্যান শাহাজাহান আলী,উপজেলা মহিলা আঃলীগের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা হক, ইউনিয়ন আঃলীগের পক্ষে নাটুয়াপাড়া ইউনিয়ন আঃলীগের সভাপতি আব্দুর রহিম, উপজেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক আলি আসলাম, স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম, ছাত্র লীগের সভাপতি রাজু আহমেদ প্রমুখ।এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা আঃলীগও তার সহযোগী সংগঠনের সদস্য বৃন্দ, বিভিন্ন ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বৃন্দ, বিভিন্ন ইউনিয়ন আঃলীগের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদক বৃন্দ, বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রধানগনসহ সর্বস্তরেরজনগণ।
মাওলানা আব্দুল মোতালেব হোসেনের মোনাজাত পরিচালনার মাধ্যমে জাতীয় চার নেতা সহ ১৫ ই আগস্টে নিহত সকলের এবং প্রয়াত জননেতা মরহুম নাসিমের আত্মার মাগফেরাত কামনায় দোয়া করা হয়।অপর দিকে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে এ দিবস উপলক্ষে আলোচনা সভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার জাহিদ হাসান সিদ্দিকী। প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন এম মনসুর আলীর দৌহিত্র প্রকৌশলী তানভীর শাকিল জয়, বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান সিরাজী। এ সময় উপস্থিত ছিলেন উপজেলা বিভিন্ন দপ্তরের কর্মকর্তাবৃন্দ, জনপ্রতিনিধিগন ও সুশীল সমাজের এক অংশ।