ঢাকাবৃহস্পতিবার , ২৫শে এপ্রিল, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আবহাওয়া
  3. আমাদের পরিবার
  4. আর্ন্তজাতিক
  5. ইসলামী জীবন
  6. এনায়েতপুর
  7. কক্সবাজার
  8. করোনা আপডেট
  9. খেলাধুলা
  10. চাকরি-বাকরি
  11. জাতীয়
  12. নাগরিক সংবাদ
  13. পাঁচমিশালি
  14. বরিশাল বিভাগ
  15. বাংলাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

কাজিপুরে ঐতিহাসিক বরইতলা যুদ্ধের ৫০ বছর পুর্তি আজ

শফিকুল ইসলাম
নভেম্বর ১৩, ২০২১ ১১:৪৯ অপরাহ্ণ
Link Copied!

আজ থেকে ৫০ বছর পুর্বে ১৪ ই নভেম্বর ছিল কাজিপুর থানার বরইতলা গ্রামবাসির জন্য বিভীষিকাময় দিন যা কাজিপুরের ইতিহাসে স্মরণীয় দিন। বরইতলা গ্রামটি দুর্গম বলে মুক্তি যোদ্ধাদের নিরাপদ আশ্রয় স্থল ছিল। ১৯৭১ সালের ১৩ ই নভেম্বর কিছু মুক্তি যোদ্ধারা এ গ্রামে আশ্রয় নেয়। কাজিপুরের শান্তি কমিটি ও রাজাকার বাহিনী পাকসেনাদের খবর দেয়। রাতের অন্ধকারে পাকিস্তানি বাহিনী ও রাজাকার বাহিনী বরইতলা গ্রাম ঘেরাও করে এবং নিবির্চারে গুলি চালাতে থাকে।এমতাবস্থায় বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে থাকা মুক্তি বাহিনীর অস্ত্র গর্জে উঠে। রাতভর যুদ্ধের পর পাকিস্তানি বাহিনী যুদ্ধ বন্ধ করে দেয়। রাতভর যুদ্ধের পর মুক্তি যোদ্ধাদের গোলাবারুদ ফুরিয়ে গেলে তারা পিছু হটে। পাকিস্তানি সেনারা গ্রামের বাড়ি বাড়ি ঢুকে নারী, পুরুষ ও শিশুদের নিবির্চারে গুলি করে ৭৬ জনকে।
মুক্তিযুদ্ধে কাজিপুরের সবচেয়ে হৃদয় বিদারক দিনটি হচ্ছে ১৯৭১ সালের ১৪ নভেম্বর। এই দিনে সিরাজগঞ্জের কাজিপুর উপজেলার বরইতলা গ্রামে বর্বর পাকবাহিনী নির্মম হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছিল। গণহত্যার শিকার হয়েছিল নারীসহ ১০৪ জন, আহত হয়েছিল অনেকে। পাক হানাদারদের দ্বারা সম্ভ্রম হারিয়েছিল সদ্য বিবাহিতা ২ গৃহবধূ। আগুনে জ্বালিয়ে দিয়েছিল পুরো বরইতলা গ্রাম।
কৌশলগত কারণে ১৩ নভেম্বর রাতে বিপুলসংখ্যক মুক্তিযোদ্ধা ওই গ্রমের ইব্রাহীম আলীর বাড়ীতে আশ্রয় নেয়। রাতেই ওই গ্রামের এক রাজাকারের মাধ্যমে সংবাদটি পৌঁছে যায় কাজিপুর থানায় অবস্থান করা পাক হানাদারদের কাছে। ভোর হতে না হতেই পাকিস্তানি বাহিনী গ্রামের পশ্চিম দিকে অবস্থান নেয়। এ সময় পাহারারত ২ মুক্তিযোদ্ধার হাতে ৩ হানাদার আহত হলে ব্যাপক গুলিবর্ষণ শুরু করে তারা। এ অবস্থায় কিছুটা অপ্রস্তুত মুক্তিযোদ্ধারা গ্রামের পূর্বপ্রান্তের একটি নালার মধ্যে অবস্থান নিয়ে পাল্টা ফায়ার করতে থাকে। এসময় হানাদার বাহিনীর একটি অংশ গ্রামের কতিপয় রাজাকারের সহায়তায় পুরো গ্রামে হামলা চালায়। বরোইতলার যুদ্ধে অংশ গ্রহন করা বীরমুক্তিযোদ্ধা মরহুম লূৎফর রহমান দুদু ভাইয়ের সূত্রে বোরোইতলার যুদ্ধের বিস্তারিত জানা গেলেও অল্পকিছু এখানে উল্লেখ করা হল। তিনি জানান, ঐদিন ১৪ নভেম্বর ভোরে খবর পেলাম বরইতলার নির্মম ঘটনার কথা গণধর্ষণের শিকার হয়েছেন এ গ্রামেরই ২ গৃহবধূ। পুরো বরইতলা তখন জ্বলছে। আমাদের মোজাফ্ফর বাহিনীকে পাকসেনারা ঘিরে রেখেছে। শতশত মানুষজন ভয়ে দৌড়াচ্ছে। পাকহানাদারদের হাত থেকে রেহাই পায়নি গ্রামের মসজিদে আশ্রয় নেয়া ২৭ জন মুসুল্লী। পবিত্র রমজান মাস ছিল তারা নামাজ শেষে মসজিদে বসে কোরান শরিফ তেলোয়াত করছিলেন। পাকসেনারা জুতা পরে মসজিদে ঢুকে বেয়নেট দিয়ে খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে কয়েকজন কে হত্যা করার পর বাকিদের গরুর মত রশি দিয়ে বেধে গ্রামের উত্তরের রাস্তায় দাঁড় করে রেখেছিল পরে তাদেরকেও ব্রাশফায়ারে মেরে ফেলে দেয়া হয়। মুক্তিযোদ্ধাদের সহায়তা করার অভিযোগে পুরো গ্রামের অসহায় গ্রামবাসি সহ অন্যস্থান থেকে তাবলিক জামায়াতে আসা ২৭ জন সহ মোট ১০৪ জন নিরপরাধ নারী-পুরুষকে হত্যা করা হয়। তিনি আরও জানান ১৪ নভেম্বর বেলাবাড়ার সাথে সাথে খবর পেয়ে এ অঞ্চলের কুড়ালিয়া, চিলগাছা, বাঐখোলা, গজারিয়া, হরিণাবাগবাটি গ্রামের শত শত মুক্তিযোদ্ধা এসে যোগ দেন পাকহানাদারদের প্রতিরোধে। বেলা ১১টা থেকে দুপুর ৩টা পর্যন্ত চলে বিরামহীন যুদ্ধ। এ যুদ্ধে সাধারণ আগ্নেয়াস্ত্রের পাশাপাশি বিপুলসংখ্যক হ্যান্ডগ্রেনেড ব্যবহৃত হয়। এক পর্যায়ে বর্বর পাক হানাদাররা পিছু হটে। এ গ্রামের ইউপি সদস্য আফসার আলী লাশের স্তূপের মধ্যে নিশ্চুপ পড়ে থাকায় ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান।
এ যুদ্ধে রবিলাল দাস, সোহরাব হোসেন, আব্দুর রাজ্জাক, চাঁন মিয়া, আব্দুল মজিদ, শাহজামাল, সুজাবত আলী, সোহরাব হোসেন, সোলায়মান হোসেন, আব্দুস ছামাদ, জমসের আলী, দেলসাদ আলী, ইজ্জত আলী, আব্দুল আজিজ নিহত হয়। অপরদিকে ৬ পাকসেনা ১ রাজাকার মারা যায়। হানাদারেরা গরুর গাড়িতে করে নিহত ৬ সেনার লাশ কাজিপুর থানায় নিয়ে যায়। রাতেই গ্রামবাসীরা মিলে যুদ্ধে নিহতদের দাফন করে। যুদ্ধ-পরবর্তীতে নিহতদের স্মরণে বরইতলায় নির্মিত স্মৃতিস্তম্ভে তাদের নাম পরিচয় লিপিবদ্ধ করা হয়েছে এবং বরইতলা গ্রামে একটি স্মৃতি সৌধ নির্মাণ করা। কাজিপুর উপজেলার সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার গাজী ইউনুস উদ্দিন জানান, নিহতদের স্মরণে সিমান্তবাজার মুক্তিযোদ্ধা স্কয়ারে দুপুরে দোয়ার আয়োজন করা হয়েছে।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।