আজ (০৩ ডিসেম্বর) কাজিপুর উপজেলা বাসির জন্য চিরস্মরণীয় দিন। এ দিনটি কাজিপুর বাসির সবচেয়ে গৌরব ও অহংকারের দিন। দীর্ঘ নয় মাস বিভীষিকাময় সময়ের পরিসমাপ্তির দিন। স্বাধীন বাংলাদেশের স্থপতি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ই মার্চের ভাষণের প্রভাবেই তার ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তি যুদ্ধে অংশ নেয় কাজিপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা গন। তারই ধারাবাহিকতায় কাজিপুরে বীর মুক্তিযোদ্ধারা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। সর্বশেষ ২ই ডিসেম্বর মুক্তিযোদ্ধারা কাজিপুর থানা আক্রমণ করে। মুক্তিযোদ্ধাদের বার্তাবাহক খবর দেয়, পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী থানা সংলগ্ন পুকুরে মাছ ধরছে। তাদের কোন প্রস্ততি নেই। এই সুযোগে মুক্তিযোদ্ধারা তাদের উপর অতর্কিত হামলা চালায়। যুদ্ধ চলে বেলা ১টার থেকে ৬ টা পর্যন্ত। এ যুদ্ধে শহিদ হয় চর কাজিপুরের বীর মুক্তিযোদ্ধা চান মিয়া ও কামারখন্দের মোজাম্মেল হক। চান মিয়াকে মারাত্মক আহত অবস্থায় আর্মিরা ধরে নিয়ে কুড়াল দিয়ে কুপিয়ে হানাদারদের পৈশাচিক তৃপ্তি মিটিয়েছে। কাজিপুর ইউনিয়নের সাউদটলা গ্রামবাসিরা চান মিয়ার তিন খন্ডিত লাশ নিয়ে শেষকৃত্য সমাধা করে। গুরুতর আহত অবস্থায় মোজাম্মেল কে বেড়িপোটল গ্রামে আনার পর মৃত্যুবরণ করে। আহত হয় অনেকে বুরুঙ্গির একরামুল হক, তেকানির আমজাদ, দুবলাইয়ের আয়নুল হক। ২রা ডিসেম্বর দিবাগত রাতে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীরা তাদের মৃত দেহ নিয়ে পালিয়ে যায়। ৩রা ডিসেম্বর কাজিপুর শক্রমুক্ত হয়, ফলে যুদ্ধকালীন মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার লুৎফর রহমান দুদু ঐ দিন থানা ভবনে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন।এভাবেই কাজিপুর হানাদার মুক্ত হয়। সেই দিন ৩ রা ডিসেম্বর কাজিপুর স্বাধীন হয়।