সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে যৌতুকের দাবিতে স্ত্রী,শাশুড়ীকে শারীরিক নির্যাতনের ২৫দিন পর মারা গেলেন স্ত্রী লাকি খাতুন (২০)। সোমবার দুপুরে লাকির বাবার বাড়ী উপজেলার ডিডি শাহবাজপুর গ্রামে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান লাকি।
এর আগে লাকি ও তার মাকে শারিরীক নির্যাতনের ঘটনায় তার স্বামী,শশুড় ও ভাসুরের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন তিনি। মামলার এজাহার থেকে জানা গেছে, প্রায় দুই বছর আগে উপজেলার ঝাটিবেলাই গ্রামের ঝড়– মন্ডলের ছেলে আব্দুল ওরফে আবু তালেবের সঙ্গে বিয়ে হয় লাকির। বিয়ের পর থেকেই বাবার বাড়ী থেকে ৫ লক্ষ টাকা যৌতুক আনার জন্য লাকিকে প্রায় সময় চাপ প্রয়োগ করতো তার স্বামী আবু তালেব।
এমতাবস্থায় গত ১৬ নভেম্বর যৌতুকের জন্য ফের চাপ প্রয়োগ করলে তার বাবা গরিব মানুষ এতো টাকা কোথায় পাবে বলে জানায় লাকি। এসময় লাকিকে কিল ঘুষি মারতে থাকে তার স্বামী। এক পর্যায়ে লাকির শশুড় আবু তালেবের হাতে একটি বাঁশের লাঠি দিলে সেটি দিয়ে লাকিকে বেধরক মারতে থাকে।
পরবর্তীতে মেয়েকে মারপিটের খবর পেয়ে লাকির মা তাকে চিকিৎসা করানোর জন্য আনতে গেলে তাকেও বেধরক মারপিট করে আবু তালেব। পরে লাকিকে উদ্ধার করে প্রথমে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। সেখানে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল পরে শহীদ এম মনসুর আলী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
এর মধ্যে গত ২৮ নভেম্বর লাকি বাদী হয়ে তার স্বামী, শশুর ও ভাসুরের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করেন। তবে এঘটনায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ। এমতাবস্থায় লাকি ও তার মা হাসপাতালে যাবার আগে লাকির সাত মাসের কন্যা শিশুকে লাকির ছোট বোনের কাছে রেখে যান। লাকির ছোট বোন মাঝে মধ্যে ওই শিশুকে নিয়ে হাসপাতালে যেতেন। পরে গত ৩০ নভেম্বর শিশুটির ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হয়। সেখানে তার অবস্থার অবনতি হলে জেলা শহরের একটি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২ ডিসেম্বর দিবাগত রাতে মারা যায় শিশুটি।
৫ ডিসেম্বর হাসপাতাল থেকে বাড়ীতে চলে আসে লাকি ও তার মা। বাড়ীতেই চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত সোমবার মারা যান লাকি। স্বামীর নির্যাতনেই লাকির মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করেন লাকির মা আনোয়ারা বেগম। তিনি তার মেয়ে হত্যার বিচার চান।
কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহা.রেজাউল ইসলাম জানান, লাকি ও তার মাকে যৌতুকের জন্য শারীরিক নির্যাতনের ঘটনায় স্বামীকে প্রধান অভিযুক্ত করে শশুড় ও ভাসুরের নামে গত ২৮ নভেম্বর একটি মামলা করেন লাকি। পরবর্তীতে ঘটনার ২৫দিন পর মারা যায় লাকি। লাকির মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বঙ্গমাতা শেখ ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতাল মর্গে প্রেরণ করা হয়েছে। ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন পেলে মৃত্যৃর আসল কারণ জানা যাবে। তখন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।