যুগের কথা প্রতিবেদন : ম্যানেজিং কমিটির সিদ্ধান্ত ছাড়াই ২০২৪ ইং সালের চলতি বছরে টেইলার্স এর সাথে চুক্তি বদ্ধ হয়ে শিক্ষার্থীদের পোষাকের নির্দেশনাসহ নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে ১৪ নং নতুন ভাঙ্গাবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোছা. নাজমুন নাহারের বিরুদ্ধে।
রবিবার (২জুন) সকালে পোষাক তৈরীর বিষয়টি নিয়ে সাবেক কাউন্সিলর রাশিদুল হাসান খান ফসি, আনোয়ার হোসেন সেখসহ এলাকার গণ্যমান্য ব্যক্তিরা প্রতিবাদ করায় মো. আনোয়ার হোসেন সেখ ও শাকিল নামে দুইজনকে পুলিশের নিকট সোপর্দ করেন প্রধান শিক্ষিকা।
আটককৃতরা হলো নতুন ভাংগাবাড়ি গ্রামের অত্র বিদ্যালয়ের
৪র্থ শ্রেণি ছাত্র মো. আবু আহাত এর বাবা ও আয়াল খার ছেলে আনোয়ার হোসেন সেখ ও একই এলাকার আব্দুর রেজ্জাকের ছেলে শাকিল।
এই ঘটনায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ম্যানেজিং কমিটি ও স্থানীয়দের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে বলে অভিযোগ উঠেছে।
স্থানীয়রা জানান, আমাদের ছাত্র-ছাত্রীদের পোষাক তৈরী করে দেয়া হয়েছে। এর পরও প্রধান শিক্ষিকা মোছা. নাজমুন নাহার ম্যানেজিং কমিটিকে অবগত না করেই একক সিদ্ধান্তে পুনরায় শিক্ষার্থীদের পোষাক তৈরীর জন্য দর্জি ডেকে এনে পোষাকের মাপ দিয়ে অভিভাককদের পোষাক বাবদ ৮৫০/- টাকা প্রদানের নির্দেশ দেন। এই নিয়ে অভিভাবক ও স্থানীয়দের মধ্যে বাগবিতন্ডা হলে প্রধান শিক্ষিকা প্রভাব খাটিয়ে মো. আনোয়ার সেখ নামে একজন অভিভাবককে থানায় সোপর্দ করেন। প্রধান শিক্ষিকা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ল্যাপটপ নিজ বাসায় ব্যবহার করছেন যা নিয়ম বহির্ভুত। একটি তারা পাম্প ছিল সেটা বেহাত হয়ে যায়।
এ বিষয়ে ২য় শ্রেণির ছাত্র আব্দুল্লাহ এর মা হাওয়া বেগম বলেন-আমাদের ছেলেপেলের পোষাক থাকা সত্বেও নতুন পোষাকের জন্য ৮৫০/- টাকা দিতে বলেছেন। যা একজন গরীর পরিবারের নিকট পুরণ করা সম্ভব না। প্রধান শিক্ষিকা নিয়মিত স্কুলে আসেন না। আসলেও ৯ টায় ক্লাস শুরু হয়। তিনি আসেন ১০টা বা ১১ টার সময়। এক জন শিক্ষক ছুটি নেবার কারনে কোন ক্লাসে শিক্ষক না থাকলে সে ক্লাসে পাঠদান চলে না। অথচ তিনি অফিস কক্ষে বসে থাকেন বলে এলাকাবাসির অভিযোগ। শিক্ষিকার ব্যবহার একেবারেই মোটেই ভাল নয়।
এ বিষয়ে প্রধান শিক্ষিকা মোছা. নাজমুল নাহার বলেন-পোষাক নিয়ে এলাকাবাসির সাথে কোন ঘটনা ঘটেনি। আমি সহকারি শিক্ষিকা সেলিনা বেগমকে প্রাইভেট পড়ানো বাদ দিতে বললে এলাকাবাসি আমার উপর ক্ষিপ্ত হয়েছেন। আমার নিরাপত্তার জন্য থানায় জিডি করেছি। আনোয়ার হোসেন সেখ ও রাশিদুল হাসান খান ফসি আমাকে হেনস্তা ও মোবাইলে ভিডিও ধারন করার চেষ্টা করলে থানায় খবর দিলে পুলিশ আনোয়ারকে আটক করে নিয়ে যায়।
অত্র বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা মোছা. সেলিনা সুলতানা বলেন-পোষাক বানানো জেরে প্রধান শিক্ষিকার সাথে এলাকাবাসির দ্ব›েদ্বর ঘটনা ঘটে। এই ঘটনাকে ধামাচাপা দিতে প্রধান শিক্ষিকা সাংবাদিকদের ও প্রশাসনকে বলেন- আমার প্রাইভেট পড়ানোকে কেন্দ্র করে দ্ব›েদ্বর সৃষ্টি হয়েছে যা সম্পন্ন মিথ্যা। দুর্বল ছাত্র-ছাত্রীদের সবল ও অত্র বিদ্যালয়ের শিক্ষার মান বাড়াতে আগে বিনা মুল্যে।
প্রাইভেট পড়াতাম । শিক্ষা অফিস থেকে নিষেধ করার পর প্রাইভেট পড়ানো বাদ দিয়েছি।
ম্যানেজিং কমিটির উপদেষ্টা মো. আক্তার হোসেন খান বলেন- বর্তমান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা আসার পর শিক্ষার মান একেবারেই খারাপ। তিনি ক্লাস বাদ দিয়ে অনুরগল মুঠোফোনে কথা বলেন। প্রধান শিক্ষিকা প্রভাব খাটিয়ে ম্যানেজিং কমিটিকে তোয়াক্কা না করে একক সিদ্ধান্তে সকল কাজ করছেন। তার আচারণে আমরা ক্ষুদ্ধ।
এ বিষয়ে ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি মো. জাহাঙ্গীর হোসেন পোষাকের ঘটনায় দ্বন্দ্বের বিষয়টি স্বীকার করে বলেন-ছাত্র অভিভাবক আনোয়ার হোসেন সেখ ও নাবালক শাকিলকে পুলিশ আটকের পর বিষয়টি অবগত হয়েছি। বিষয়টি নিরশনের জন্য সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উর্দ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট কথা হয়েছে। অচিরেই বসে আপোষ মিমাংশা করা হবে।
ম্যানেজিং কমিটির অধিকাংশ সদস্য ও এলাকাবাসি প্রধান শিক্ষিকা মোছা. নাজমুল নাহারের বদলীর দাবী করেন। নইলে উক্ত বিদ্যালয়ের শিক্ষা ব্যবস্থার অপুরনীয় ক্ষতিসাধিত হবার শংকায় ভুগছে ছাত্র-ছাত্রী অভিভাবকরা।