ঢাকাসোমবার , ১৪ই অক্টোবর, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আবহাওয়া
  3. আমাদের পরিবার
  4. আর্ন্তজাতিক
  5. ইসলামী জীবন
  6. এনায়েতপুর
  7. কক্সবাজার
  8. করোনা আপডেট
  9. খেলাধুলা
  10. চাকরি-বাকরি
  11. জাতীয়
  12. নাগরিক সংবাদ
  13. পাঁচমিশালি
  14. বরিশাল বিভাগ
  15. বাংলাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

মানবজাতিকে ঔপনিবেশিক ব্যবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হবে

দিমিত্রি মেদভেদেভ
আগস্ট ১৫, ২০২৪ ১০:৪৬ অপরাহ্ণ
Link Copied!

ফুরিয়ে এসেছে ঔপনিবেশিক শক্তির সময়:
মানবজাতিকে ঔপনিবেশিক ব্যবস্থা থেকে মুক্তি পেতে হবে

বর্তমান সময়ে যৌথ প্রচেষ্টার মাধ্যমে একটি বহুকেন্দ্রিক বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশ্বের বেশিরভাগ দেশই ঔপনিবেশিক ব্যবস্থা মুক্ত একটি বৈশ্বিক সম্প্রদায়ে বসবাস করার ইচ্ছা প্রকাশ করছে। তাদের লক্ষ্য হল বহুপাক্ষিকতা, সার্বভৌমত্বের সমতা, শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং বিভিন্ন রাজনৈতিক ও সামাজিক ব্যবস্থাসহ দেশগুলির মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধার ভিত্তিতে একটি বিশ্ব গঠন করা।
নব্য-উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে লড়াই শুধুমাত্র সংঘাতের উদ্দেশ্যে একটি অন্তহীন লড়াই নয়। এই আন্দোলনের প্রাথমিক লক্ষ্য হল সভ্যতার সার্বভৌমত্ব অর্জনে রাষ্ট্রগুলিকে উৎসাহিত করা, যা একবিংশ শতাব্দীর অবক্ষয় ও ধ্বংস রোধে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শতাব্দীর শুরুতে, ‘ব্যর্থ রাষ্ট্র’ হিসাবে চিহ্নিত হওয়া একটি দেশের জন্য সবচেয়ে ভয়ঙ্কর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। আজ, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সত্তার যথাযথ প্রয়োগ ছাড়াই দুর্বল এবং সর্বজনীনভাবে স্বীকৃত রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা প্রয়োগ না করার কারণে ‘অনিরাপদ রাষ্ট্র’ শব্দটির গুরুত্ব বাড়ছে। কেবলমাত্র যে দেশগুলি সম্পূর্ণরূপে সার্বভৌম এবং অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক উভয় দিক থেকে স্বাধীন, তারাই কেবল, তাদের উপর চাপিয়ে দেওয়া অসম অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক পরিস্থিতিকে কার্যকরভাবে প্রতিরোধ করতে পারে।
আন্তর্জাতিক বর্ণবৈষম্য দূরীকরণ দিবসে ২১শে মার্চ যে কথা বলা হয়েছে তা প্রশংসনীয় হলেও, পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে তা যথেষ্ট নয়। যথাযথ এবং ধারাবাহিকভাবে ঔপনিবেশিক বিরোধী আলোচনাকে জনসাধারণের আলোচ্যসূচিতে রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আমি দৃঢ়প্রত্যয়ী যে, অনুরূপ মতামতের ব্যক্তিদের একটি বিস্তৃত গোষ্ঠী উপনিবেশবাদের সমাপ্তি এবং নব্য-ঔপনিবেশিক অনুশীলনের বিরুদ্ধে লড়াইকে জোরদার করতে পারে। এই গোষ্ঠীটি একটি আন্তঃরাজ্য পরামর্শমূলক ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করতে পারে যা ঔপনিবেশিক আমলে সংঘটিত ক্ষতির অনুমান করতে এবং অপরাধগুলি প্রকাশ করতে জাতীয় কমিশনগুলিকে একত্রিত করবে।
বিংশ শতাব্দীতে শুরু হওয়া উপনিবেশবাদের অবসান প্রক্রিয়াটি দীর্ঘস্থায়ী এবং গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। এখানে একটি তালিকা মনে করিয়ে দিতে চাই, যা ডিক্লোনাইজেশন সম্পর্কিত জাতিসংঘের বিশেষ কমিটি দ্বারা অনুমোদিত, যার মধ্যে ১০ টি অ-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চল রয়েছে যা যুক্তরাজ্য দ্বারা পরিচালিত; তিনটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দ্বারা পরিচালিত; ফ্রান্স দ্বারা দুটি এবং নিউজিল্যান্ড দ্বারা একটি। ১৯৬০ এবং ১৯৭০-এর দশকে ঔপনিবেশিক ব্যবস্থার পতনের পর কৃত্রিমভাবে সংরক্ষিত পশ্চিমা সাম্রাজ্যের ঔপনিবেশিক “ছোট রাষ্ট্রগুলি ” যাতে প্রকৃত স্বাধীনতা অর্জন করতে পারে তার জন্য গ্লোবাল সাউথের দেশগুলিকে সম্মিলিত প্রচেষ্টা করতে হবে।
ব্রিকস ও এসসিও(SCO)-সহ বৈশ্বিক ও আঞ্চলিক গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে বিভিন্ন বিন্যাসে নিজেদের প্রচেষ্টাকে সারিবদ্ধ করতে, সুদূরপ্রসারী লক্ষ্য অর্জনের জন্য কাজ করে চলা ‘মুভমেন্ট ফর দ্য ফ্রিডম অফ নেশনস “-এর দ্বার উন্মুক্ত রাখাও কম গুরুত্বপূর্ণ নয়। উদাহরণস্বরূপ, উন্নয়নশীল দেশগুলিতে আর্থিক নিরাপত্তার জন্য অর্থনৈতিক বিরোধী ব্যবস্থা গ্রহণ এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল ও বিশ্বব্যাংকের পূর্ণাঙ্গ সংস্কার বাস্তবায়নে এই সংস্থা সাহায্য করতে পারে । এটি ব্রিকস দ্বারা প্রচারিত আর্থিক স্বাধীনতার ধারণার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ।
উপনিবেশবাদের যে অপরাধগুলির সীমাবদ্ধতার আইন নেই, সেগুলির উপর জোর দেওয়া উচিত। ঔপনিবেশিক যুগের অপরাধের পাশাপাশি আধুনিক নব্য-ঔপনিবেশিক অনুশীলনের বিষয়ে জাতিসংঘে একটি সাধারণ পাবলিক ডাটাবেস (রেজিস্টার) তৈরির বিষয়টি বিবেচনা করা এবং তাদের অঞ্চলে সংঘটিত যুদ্বের কারণে হওয়া ক্ষতির মূল্যায়ন করার জন্য একটি স্কেল তৈরি করা প্রয়োজন।
নিওমেট্রোপোলিসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সম্পদ হল তাদের পকেট, যা মূলত বিশ্বের অন্যান্য দেশকে শোষণ করে ভর্তি হয়। আমরা বিশ্বাস করি যে নব্য-উপনিবেশবাদের শিকারদের স্পষ্ট, আইনত যাচাইযোগ্য এবং যথাযথ প্রমাণের ভিত্তিতে ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিত। রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক দিকগুলির পাশাপাশি তাদের কার্যকলাপের একটি স্পষ্ট আইনি মূল্যায়ন থাকা দরকার।
আমাদের অংশীদাররা ইতিমধ্যেই এ বিষয়ে কাজ করছে। ২০১৪ সালে, ক্যারিবিয়ান সম্প্রদায়ের (ক্যারিকম) ১৫ জন সদস্য ন্যায়বিচারের জন্য একটি ১০-দফা পরিকল্পনা গ্রহণ করেছিল। ঔপনিবেশিক ক্ষয়ক্ষতি গণনার সঠিক ভিত্তি হল এর অনেক বিধান।। ২০২৩ সালের নভেম্বরে, আফ্রিকান মহাদেশের জনগণের জন্য নব্য-উপনিবেশবাদীদের দ্বারা করা ক্ষতির, ক্ষতিপূরণ সম্পর্কিত প্রথম আন্তর্জাতিক সম্মেলন ঘানায় অনুষ্ঠিত হয়েছিল, যেখানে আফ্রিকান জাতীয় মুক্তি আন্দোলনের অন্যতম বিশিষ্ট নেতা কে. এনক্রুমাহ অংশগ্রহণ করেছিলেন। আফ্রিকা থেকে ১২ মিলিয়নেরও বেশি লোককে দাসত্বের জন্য বিক্রি করা হয়েছিল, ট্রান্সআটলান্টিক দাস বাণিজ্যের ক্ষতিপূরণ কমপক্ষে ১০০ ট্রিলিয়ন ডলার হতে পারে।
অতীতের পাপের প্রতিদান দেওয়ার জন্য, ‘পশ্চিমাদের’ নিজেদের পকেট থেকে অনেক খরচ করতে হবে। যে সব দেশ এবং বেসরকারী সংস্থাগুলি কয়েক দশক ধরে আটলান্টিক অতিক্রম করে দাস বাণিজ্যে নিযুক্ত রয়েছে তাদের অবশ্যই আফ্রিকানদের বিরুদ্ধে অবিচার এবং বর্ণবাদের দায় স্বীকার করার সাহস থাকতে হবে। ব্যাঙ্কিং ও বীমার ক্ষেত্রে সমসাময়িক আর্থিক গোষ্ঠী এবং সংস্থাগুলির একীভূতকরণ এবং অধিগ্রহণের ইতিহাস গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করলে, দেখা যাবে যে তাদের মধ্যে অনেকেই অষ্টাদশ থেকে উনিশ শতকে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। এর মানে হল যে, তারা ঔপনিবেশিক বাণিজ্যের মাদ্যমে তাদের নিজেদের পকেট ভর্তি করেছিল।
ঔপনিবেশিক শাসন আমলে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলির দ্বারা উত্থাপিত ক্ষতিপূরণমূলক ন্যায়বিচারের ধারণাটি গ্রহণযোগ্য। বিশেষ করে, জাতিসংঘের স্থায়ী ফোরাম অফ পিপল অফ আফ্রিকান ডিসেন্টের দ্বিতীয় অধিবেশনে জাতিসংঘের মধ্যে একটি বিশেষ আন্তর্জাতিক ট্রাইব্যুনাল প্রতিষ্ঠার উদ্যোগ নেওয়া হয় যাতে জাতিসংঘের অন্যান্য বর্ণবাদবিরোধী ব্যবস্থার সাথে সমন্বয় করে ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা যায়। আমরা আশা করি, আমাদের আফ্রিকান ও ল্যাটিন আমেরিকার বন্ধুরা এই যাত্রায় সফল হবেন।

লেখক:

দিমিত্রি মেদভেদেভ

রাশিয়ান ফেডারেশনের নিরাপত্তা কাউন্সিলের ডেপুটি চেয়ারম্যান ও ইউনাইটেড রাশিয়া পার্টির চেয়ারম্যান

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।