সাধারণত, নভেম্বরের শুরু থেকেই রবিশস্যের আবাদ শুরু করেন কৃষকরা। চলতি মৌসুমে বিলে এখনো পানি থাকায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে।
বৃহস্পতিবার (৭ নভেম্বর) সিরাজগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অফিস সূত্রে জানা গেছে, এই মৌসুমে সরিষা, রসুন, পেঁয়াজ, ধনিয়া, কালোজিরাসহ মসলা জাতীয় ফসলের আবাদ করা হয়। শীতকালীন সবজির মধ্যে খেসারি, চিনাবাদাম, গম-ভুট্টা ও আলু চাষ হয়। বর্তমানে বিলের ১ লাখ ৪৬ হাজার ১০ হেক্টর পানির নিচে তলিয়ে রয়েছে। আগামী ১৫ দিনের মধ্যে চলনবিল থেকে পানি না সরলে সরিষাসহ রবিশস্য আবাদ ব্যাহত হতে পারে।
সূত্র আরো জানায় উত্তরাঞ্চলের শস্য ভাণ্ডার হিসেবে খ্যাত চলনবিলের সিরাজগঞ্জ অংশে সবচেয়ে বেশি সরিষার আবাদ হয়। জেলার উল্লাপাড়া, তাড়াশ, রায়গঞ্জ ও শাহজাদপুরের বিলে ফসল আবাদ হয়। গত মৌসুমে এই জেলায় শুধু সরিষা আবাদ হয়েছিল ৮৫ হাজার ১৭০ হেক্টর জমিতে। এ বছর সরিষা চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৯০ হাজার হেক্টর জিমিতে। অন্য রবিশস্য চাষের লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে ৫৬ হাজার ১০ হেক্টর জমিতে।
কৃষকরা জানান, চলনবিলের উর্বর মাটিতে রবিশস্য আবাদ ভালো হয়। প্রতি বছরই সরিষা, রসুন, পেঁয়াজ ও শষার বাম্পার ফলন হয়ে থাকে। নভেম্বরের শুরু থেকেই কৃষকরা রবিশস্য আবাদ শুরু করেন। চলতি মৌসুমে বিলে এখনো পানি থাকায় নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আবাদ ব্যাহত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে কৃষকদের ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়তে হতে পারে।
তাড়াশ উপজেলার তালম ইউনিয়নের কৃষক কুসা শেখ বলেন, চলনবিল ঘিরে ছোট ছোট অসংখ্য নদী, খাল ও বিল ছিল। নদীর মধ্যে বড়াল, আত্রাই, গুমানী, ইছামতি, করতোয়া, গোহালা, ভদ্রাবতী, বিলসূর্য, গাড়াদহ, কাকন-কানেশ্বরী, সরস্বতী, মুক্তাহার, নাগর, শালিকা, তুলসীগঙ্গা, বারণী ও ফুলজোড় নদী বয়ে গেছে। বর্ষায় এসব নদীর পানি উপচে বিলে প্রবেশ করে। পরে এসব নদী হয়েই বিলের পানি যমুনায় যায়।
সুজাদ আলী নামে অপর কৃষক বলেন, চলতি বছর দফায় দফায় বৃষ্টি, নদীতে অবৈধ মাছ শিকারের জন্য পানি প্রবাহ বাঁধাগ্রস্ত করা, যত্রতত্র পুকুর খনন, নদী দখল, কচুরিপানা জমে থাকাসহ নানা কারণে বিলের পানি ধীরগতিতে নামছে। যে কারণে রবিশস্য মৌসুম শুরু হলেও বিলের বেশিরভাগ অংশ এখানো পানির নিচে রয়েছে। তাই রবিশস্য আবাদ শুরু করতে পারছি না।
সিরাজগঞ্জ জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (উপ-পরিচালক) আ. জা. মু. আহসান শহীদ সরকার বলেন, এখন রবিশস্য চাষের ভরা মৌসুম। রবি মৌসুম শুরু হলেও বিলের জমি জলমগ্ন থাকায় চাষাবাদ শুরু করতে পারেনি কৃষকরা। আগামী ১৫ থেকে ২০ দিনের মধ্যে পানি না নামলে রবিশস্য আবাদ নিয়ে ঝুঁকির মুখে পড়তে পারেন কৃষক।