বিশেষ প্রতিনিধি : চলনবিলে রাতভর অতিথি পাখিসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি নিধন করে চলেছেন শিকারিরা। এই মৌসুমে বিভিন্ন পরিযায়ী পাখির ব্যাপক চাহিদা থাকায় কারেন্ট জালের ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করছেন শিকারিরা। মানুষজন মুঠো ফোনে যোগাযোগ করে আগে থেকেই পাখি কেনার জন্য টাকা দিয়ে রাখেন পাখি শিকারিদের কাছে। এদিকে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ আইনের নূন্যতম প্রয়োগ না থাকায় পাখি শিকারিদের দৌরাত্ম্য বেড়ে গেছে বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) সকালে সরজমিনে দেখা যায়, চলনবিল অধ্যুষিত তাড়াশ উপজেলার সোনাপাতিল গ্রাম এলাকার বিস্তীর্ণ মাঠ থেকে রাতের আঁধারে রাত চোরা ও অতিথি পাখি বালিহাঁসসহ বিভিন্ন প্রজাতির পাখি শিকার করেছেন শিকারিরা।
এদিকে স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মেজবাউল করিম বলেন, পাখি শিকার করা দণ্ডনীয় অপরাধ। শিকারিরা রাতে চলনবিলের প্রত্যন্ত এলাকা থেকে পাখি শিকার করছেন। এরপর দিনের বেলাতে তারা গা ঢাকা দিয়ে থাকছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দুজন পাখি শিকারি জানান, পাখি শিকারের ক্ষেত্রে তেমন বিধি নিষেধ নেই। এই মৌসুমে এসব পাখির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে। মানুষজন মুঠো ফোনে যোগাযোগ করে আগে থেকেই পাখি কেনার জন্য টাকা দিয়ে রাখেন। চাহিদা থাকায় ও দাম ভালো পাওয়ায় প্রতি রাতে তারা পাখি শিকার করেন। কারেন্ট জালের ফাঁদ পেতে তারা পাখি শিকার করেন।
স্থানীয় স্বাধীন জীবন নামে একটি জীব বৈচিত্র্য প্রকৃতি সংরক্ষণ কাজের স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের প্রতিষ্ঠাতা ও নির্বাহী পরিচালক আব্দুর রাজ্জাক নাছিম বলেন, মূলত খাওয়ার লোভে ও অপেক্ষাকৃত শীত থেকে বাঁচতে নানা প্রজাতির পাখি চলনবিলে আশ্রয় নেয়।
উপজেলা বন কর্মকর্তা কামরুজ্জামান বলেন, রাতে পাখি নিধন করা হচ্ছে। সেজন্য কিছু করতে পারছিনা।
বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিটের পরিচালক জহির আকন্দ বলেন, বাংলাদেশ বন্যপ্রাণী অপরাধ দমন ইউনিট পাখিদের অবাধ বিচরণের জন্য সারাদেশে ব্যাপক জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম শুরু করেছেন। এরপরও পাখি নিধন বন্ধ না হলে বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন, ২০১২ অনুযায়ী পাখি শিকারিদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।