স্টাফ রিপোর্টারঃ
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে যৌতুকের দাবী পুরণ করতে না পারায় সেনাসদস্য ইউসুফ আলীর হুকুমে তার বাবা-মা কর্তৃক মেয়ের মা’ বুলবুলি খাতুনের মুখে জোরপুর্বক বিষ ঢেলে দিয়ে হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এদিকে মুমুর্ষ অবস্থায় ভুক্তভোগি ওই নারীকে উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ ২৫০ শয্যা বিশিষ্ট বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিব জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক। ঘটনাটি গত শনিবার (৮ জানুয়ারী) সকালে কামারখন্দ উপজেলার চৌবাড়ী পশ্চিমপাড়া গ্রামের সেনাসদস্য ইউসুফ আলীর বাড়ীতে।
অভিযোগ সুত্রে সরেজমিনে গিয়ে জানাযায়,উল্লাপাড়া উপজেলার পঞ্চকোশী ইউনিয়নের শাহীকোলা গ্রামের মোখলেসুর রহমানের ছোট মেয়ে বিজলী খাতুন(১৮)’র সাথে কামারখন্দ উপজেলার চৌবাড়ী গ্রামের আনোয়ার হোসেনর ছেলে সেনাসদস্য ইউসুফ আলী (২১) সাথে ছয় লক্ষ টাকা যৌতুক মুলে বিগত দুই বছর আগে(২০১৯ সালে) বিয়ে হয়। কিন্তু বিয়ের মাত্র ১ বছর আগে সেনাবাহিনীতে চাকরী হয় ইউসুফ আলীর। কিন্তু তিনি অতি গোপনে এবং কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে ৬ লাখ টাকা যৌতুক নিয়ে চাকরী গ্রহনের ১ বছরের মাথায় বিজলী খাতুনকে বিয়ে করেন।
এদিকে সেনাবাহিনীর নীতিমালা অনুযায়ী ট্রেনিংসহ চাকরীর নিদিষ্ট বয়স না হওয়া পর্যন্ত সেনাসদস্য বিয়ে করার বাধ্যবাধ্যকতার আইন থাকলেও তা মানেননি যৌতুকলোভী সেনাসদস্য ইউসুফ আলী।
এদিকে সেনা আইন অনুযায়ী নিদিষ্ট বছর পার হলেও তাও আবার কর্তৃপক্ষের অনুমতি সাপেক্ষে বিয়ে করতে হয়।
তবে কোনকিছুই তোয়াক্কা করেননি রংপুর ক্যান্টমেন্টে কর্মরত এই সেনাসদস্য ইউসুফ আলী। ভুক্তভোগি বুলবুলি খাতুনের স্বামী মোখলেছুর রহমান বলেন,মেয়ে বিজলী খাতুনকে বিয়ের সময় ৬লাখ টাকা যৌতুক দিয়েছি। কিন্তু সে সময় কাবিনের কথা বললে আমার মেয়ের জামাতা সেনাসদস্য ইউসুফ আলী ও তার পিতা আনোয়ার হোসেন বলেন এখন কাবিন করা যাবেনা,কারণ চাকরীর বয়স তিন বছর পার করতে হবে এবং এই বিয়ের কথা গোপন রাখতে হবে। এভাবে চলতে থাকার একপর্যায়ে মেয়ে বিজলী খাতুনের গর্ভে সন্তান আসে,যার গর্ভের সন্তানের বয়স ৫মাস। এদিকে আমি যখন আমার মেয়ের জামাতাসহ তার বাবা-মাকে কাবিন করার জন্য চাপ দেই তখন তারা আমার নিকট ২ লাখ টাকা পুনরায় যৌতুক দাবী করে। কিন্তু তা দিতে আমি অসম্মতি জ্ঞাপণ করলে কাবিনের বিষয়টি তখন তারা অস্বীকার করে বসে এবং আমার মেয়ের উপর শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু হয়। একপর্যায়ে গত শনিবার(৮জানুয়ারী) সকালে আমার স্ত্রী বুলবুলি খাতুন কামারখন্দের চৌবাড়ী আমার বিয়াই আনোয়ার হোসেনের বাড়ীতে খোজ-খবর নিতে গেলে আমার সেনাসদস্য জামাইয়ের মোবাইল ফোনের হুকুমে আমার বিয়াই আনোয়ার হোসেন ও বিয়ান মিলে আমার স্ত্রীর মুখে জোরপুর্বক বিষ ঢেলে দিয়ে হত্যার চেষ্টা চালায়। পরে স্থানীয়রা তাকে অজ্ঞান অবস্থায় উদ্ধার করে সিরাজগঞ্জ সদর হাসপাতালে ভর্তি করেছে। তবে বর্তমানে তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।
এঘটনায় কামারখন্দ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো: হাবিবুল্লাহ জানান এ বিষয়ে এখনো কোন অভিযোগ পায়নি তবে অভিযোগ পেলে তদন্ত পূর্বক আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে