কামারখন্দে বন্ধ হচ্ছে না মিটার চুরি
ক্ষতির আশঙ্কায় চালকল মালিক ও কৃষকরা
রাইসুল ইসলাম রিপন : দেড় মাসের ব্যবধানে সিরাজগঞ্জের কামারখন্দে আবারো এক রাতে ১৫টি মিটার চুরি হয়েছে। গত মঙ্গলবার (২২ ফেব্র“য়ারি) রাতে কামারখন্দ থানা এলাকায় ৫টি, ঝাঐল মালেক মোড়ে ৫টি ও অন্য ৫টি কামারখন্দ উপজেলার সীমান্তবর্তী এলাকা সদর উপজেলার হরিপুর এলাকায়। চুরি যাওয়া ১৫টি মিটারের মধ্যে ৮টি সেচ ও ৭টি চালকলের। সেচ ও চাল কলগুলোর মিটার চুরি হওয়ায় বন্ধ রয়েছে বিদ্যুৎ সংযোগ। সেচের মিটার চুরি হওয়ায় বোরোর ভরা মৌসুমে ধানের জমিতে পানি দিতে না পেরে ক্ষতির আশঙ্কায় রয়েছেন কৃষকরা। অন্যদিকে ধান সিদ্ধ করা থেকে শুরু করে চাল তৈরীর সকল প্রক্রিয়া বন্ধ থাকায় বিপাকে পড়েছেন চালকল ভুক্তভোগী মালিকরা।
কামারখন্দ থানা এলাকার চালকল মালিক বাচ্চু জানান, আমরা চালকল মালিকরা এমনিতেই ঋণগ্রস্থ। ধানের দাম বেশি চালের ক্রেতা কম। রাতে সব ঠিকঠাক থাকলেও সকালে দেখি মিটার নেই, শুধু আছে মিটারের বাক্স। সেখানে একটি টোকেনে রাখা আছে বিকাশ নম্বর। সেই নম্বরে ফোন করলে ২০ হাজার পাঠাতে বলে চোরচক্র। টাকা দিতে না পারায় মিটার ফেরত পাইনি। আমার চালকলের ধান ভাঙ্গানো বন্ধ রয়েছে।
একই এলাকার চালকল মালিক রাসেল হোসেন জানান, হঠাৎ রাতে আমি বাহিরে বের হলে দেখি মিটারের আশেপাশে কয়েকজন ঘোরাফেরা করছে। তাদের জিজ্ঞেস করলে তারা পল্লী বিদ্যুতের লাইনম্যান বলে জানায়। পরে সকালে এসে দেখি মিটার নেই। মিটার বাক্সে রাখা একটি মোবাইল নম্বরে ফোন করলে সেই নম্বরের বিকাশ এ্যাকাউন্টে টাকা পাঠালে মিটার ফেরত দেয়া হবে জানায়। আমার চাতালের আশেপাশে পাঁচটি মিটার চুরি হয়েছে।
ঝাঐল মালেক মোড় এলাকার সেচ মালিক হুজায়ফা জানান, মিটার চুরি হওয়ায় আমার আওতাধীন প্রায় ২০ বিঘা জমিতে সেচ দিতে না পারায় ধান খেত শুকিয়ে যাচ্ছে। কৃষকরা খুব হতাশার মধ্যে রয়েছে। আমার সেচের আশেপাশে সেচ ও শিল্প সংযোগ মিলে অন্তত ১০টি মিটার চুরি হয়েছে।
কামারখন্দ সার্কেলের সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার শাহীনুর কবীর জানান, মিটার চুরির বিষয়টি নতুন কিছু নয়। মাস খানেক আগে মিটার চোর চক্রের তিনজনকে গ্রেফতার করেছি। এই চক্রের সকল সদস্যদের খুব অল্প সময়ের মধ্যে গ্রেফতার করা হবে।
সিরাজগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর জেনারেল ম্যানেজার (জিএম) অখীল কুমার সাহা জানান, পল্লী বিদ্যুতের কর্মীরা মিটার চুরির সঙ্গে সম্পৃক্ত নয়। গভীর রাতে পল্লী বিদ্যুতের কোন কর্মী কাজে গেলে অবশ্যই তিনি তার আইডি কার্ড প্রদর্শন করবেন। মিটার চুরির বিষয়টি খতিয়ে দেখতে পুলিশকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির পক্ষ থেকে মিটার চুরি রোধে মাইকিং করা সহ লিফলেট বিতরণ ও গ্রাহকদের মিটার পাহাড়া দেয়ার জন্য বলা হচ্ছে। উল্লেখ্য, গত ০১ জানুয়ারি রাতে কামারখন্দ উপজেলায় ১৭টি চালকলের মিটার চুরি হয়।