এই সড়কটি দীর্ঘদিন ধরে সংস্কার না হওয়ায় তাড়াশ ও নাটোরের গুরুদাসপুর উপজেলার ২৫/৩০টি গ্রামের লক্ষাধিক মানুষের যাতায়াতে চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে’।
শুক্রবার (২৫ মার্চ) সরেজমিনের গিয়ে দেখা যায়, তাড়াশ উপজেলার তাড়াশ-কুন্দইল সড়কের নিচের অংশের খোয়া এবং ইট নিম্ন মানের হওয়ায় নির্মাণ কাজ বন্ধ করে দিয়েছে এলাকাবাসী।
স্থানীয় সান্দা গ্রামের ভ্যানচালক মিনার, লালুয়া মাঝিড়া গ্রামের রাজমিস্ত্রি মাসুদ রানা, ভ্যানচালক আয়নাল, ছোবাব ও আব্দুল হামিদসহ তারা বলেন, সড়কটির পুরো অংশেই বড় বড় গর্ত রয়েছে। এই কারণে মাঝে মধ্যেই ছোটখাট দুর্ঘটনায় পড়তে হয় যানবাহনগুলোকে। সেই বড় বড় গর্তসহ বিভিন্ন স্থানে নিম্ন মানের পাথর বিটুমিন দিয়ে কার্পেটিং করছে ঠিকাদারের লোকজন।
তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলীর কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, প্রায় চার বছর আগে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল বিভাগের আওতাধীন তাড়াশ-কুন্দইল সড়কটির পূর্বের অংশে ৩৬শ মিটার পাথর বিটুমিনের কার্পেটিং করা হয়। এর বাকি অংশ সাব মার্চিবল (ডুবো সড়ক) সড়ক নির্মাণ করা হয়। এরপর রাস্তাটি আর সংস্কারের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। কয়েক বছরের বন্যায় রাস্তাটির কার্পেটিং করা অংশের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত সৃষ্টি হয়েছে। উঠে গেছে সড়কটির নিচের অংশের খোয়া এবং ইট। ফলে সড়কটি দিয়ে যানবাহন চলাচলে চরম দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।
স্থানীয়রা বলেন, ‘চলনবিল অধ্যুষিত তাড়াশ ও গুরুদাসপুর উপজেলার অন্তত চারটি ইউনিয়নের অন্তত ২৫টি গ্রামের মানুষের যোগাযোগের অন্যতম সড়ক এটি। ধান, সরিষা ও ভুট্টাসহ এ অঞ্চলের কৃষকের উৎপাদিত কৃষি পণ্য সরবরাহ করা হয় এ পথেই। হাসপাতাল, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালতে যাওয়ার রাস্তাও এটি। এ রাস্তাটি সংস্কার না করায় অন্তত লক্ষাধিক মানুষ চরম দুর্ভোগে পরে। পরে গত ১৫ জানুয়ারী ২০২২ইং তারিখে আবার নির্মাণ কাজ শুরু হয়।
নিম্ন মানের কাজের কারণে নির্মাণ কাজ বন্ধ রয়েছে বিষয়ে জানতে চাইলে তাড়াশ উপজেলা প্রকৌশলী ইকতেখার আহমেদ বলেন, ‘৮/১০ মাস আগেই ওই রাস্তার টেন্ডার হওয়ার পর নির্মাণ কাজ শুরু হয়েছে। ডিজিটাল মিকচার মেশিন নতুন হওয়ায় বিটুমিন মেশানোর সমস্যা হয়। এই কারণে বিভিন্ন স্থানে সঠিকভাবে পাথর বিটুমিন মেশানো হয়নি। রাস্তা কাজের কিছু নিম্ন মান ইট ও খোয়া ব্যবহার করা হয়েছে। নিম্ন মানের খোয়া এবং ইট ব্যবহার করায় এলাকাবাসীর বর্তমানে কাজ বন্ধ করে দিয়েছে।
তাড়াশ উপ-সহকারী প্রকৌশলী আনোয়ার হোসেন বলেন, নতুন ডিজিটাল মিকচার মেশিনে অতিরিক্ত তাপের কারণে মিকচার পুড়ে যায় এই কারণে বিটুমিন মেশানোর সমস্যা হয়। এলাবাসীর মনে করেন এখানে নিম্ন মানের কাজ হচ্ছে। সেই কারণে তারা কাজে বাঁধা দেয়। পরে কাজ বন্ধ রাখা হয়েছে।
ঠিকাদার মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘এই রাস্তা সংস্কারের জন্য ১২ কোটি টাকার প্রকল্প পাস হয়েছে। আমরা দরপত্র জমা দিয়ে ওয়ার্ক ওয়ার্ডার পেয়ে কাজও শুরু করেছিলাম। কিছু কাজ করার পর জানতে পারি ওয়ার্ল্ড ব্যাংকের সঙ্গে সরকারের চুক্তি সই না হওয়ায় বরাদ্দ অনুমোদন হয়নি। এ কারণে কাজ বন্ধ করে দেই। পড়ে বরাদ্দ পেয়ে কাজ শুরু করি। তিনি আরো বলেন, ডিজিটাল মিকচার মেশিন নতুন হওয়ায় বিটুমিন মেশানোর একটু সমস্যা হয়। সেই কারণে এলাকাবাসীরা কাজটি বন্ধ করে দেয়। এখানে মারপিটের কোন ঘটনা ঘটেনি।