মোঃরাইসুল ইসলাম রিপন,কামারখন্দ ( সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিঃ
সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার নুরনগর, দশসিকা,গাড়াবাড়ী,নুরনগর তালপট্টি,ডিডি শাহবাজপুর গ্রামের মধ্যে দিয়ে বয়ে গেছে ফুলজোর নদী। এসব এলাকার চরগুলোতে অতিরিক্ত বালুর কারণে বাদাম সহ কয়েকটি ফসলের উপর নির্ভর করে চাষাবাদ হতো সনাতনী পদ্ধতিতে। তাও আবার ফলন খুবই কম। এখন বন্যায় মাটিতে পলি পড়ার কারণে মাটির উর্বরতা বৃদ্ধি বেড়েছে।
তবে চরে এখন আবাদ হচ্ছে মরিচ,আলু, বেগুন,পটল,ঢেড়শ,মিষ্টি আলু,সূর্যমূখী সহ নানা ধরনের ফসল। এসব ফসলের ভাল ফলনে ঘুরে দাঁড়িয়েছে চরের মানুষ। আধুনিক কৃষি, মৎস্যচাষ,পশু-পাখি পালনের মাধ্যমে নারী-পুরুষের যৌথ প্রচেষ্টায় ভাগ্য বদলেছে চরাঞ্চলের মানুষের।
উপজেলার চর নুরনগর গ্রামের কৃষক সায়দার আলী বলেন,চরে আগে বালুর কারণে তেমন কোন ফসলের আবাদ হতো না। ভাগ্যক্রমে বর্ষায় চরে বালুর উপর পলি পড়ে এই চর এখন বিভিন্ন ফসল চাষের উপযোগী। চরের নারী পুরুষের সমান তালে কাজ করার কারণে এখন দিন বদলেছে। এখন কৃষিই আমাদের প্রধান কাজ। কৃষি কাজের মাধ্যমে আমরা জীবিকা নির্বাহের পাশাপাশি আর্থিক ভাবেও স্বাবলম্বী হয়েছি।
একই এলাকার কামাল হোসেনের স্ত্রী আসমা বেগম জানান, আমি অনেক কাজে আমার স্বামীকে সাহায্য করি। আমাদের দুজনের চেষ্টায় বাড়িতে গরু পালন, জমিতে শাকসবজি এবং পুকুরে মাছ চাষ করি এখন আমরা অনেকটাই স্বাবলম্বী। শুধু আমরা না, এখানকার অনেক পরিবার এভাবেই তাদের ভাগ্য বদলিয়েছে।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আনোয়ার সাদাত জানান, উপজেলার চরগুলোর অর্থনৈতিক উন্নয়ন বৃদ্ধি করার জন্য আমরা নিয়মিত কৃষক মাঠ দিবসের মাধ্যমে সেখানকার কৃষকদের কৃষি কাজে দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি কৃষি অফিসের নানা ধরনের প্রকল্পের মাধ্যমে কৃষকদের বিনামূল্যে সার, বীজ ও বিভিন্ন প্রকার আধুনিক যন্ত্রাংশ প্রদানের মাধ্যমে চরের কৃষিকে আধুনিক কৃষিতে রুপান্তিত করতে পেরেছি।
উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা সেলিম রেজা জানান, ইতিমধ্যে চরের মানুষের মধ্যে মাছ চাষের আগ্রহ বেড়েছে। আমরা কয়েকটি প্রকল্পের মাধ্যমে বেশ কয়েকজনকে পুকুরে নানা ধরনের মাছ চাষ ও খাঁচায় মাছ চাষের জন্য প্রশিক্ষণ দিয়েছি। চরাঞ্চলের মানুষগুলো খুব পরিশ্রমী তাই তারা চেষ্টা করলে তাদের এলাকায় মাছ চাষের মাধ্যমে আরও উন্নতি করতে পারবে। আমরা সকল ধরনের সহায়তা করার চেষ্টা করবো।