প্রায় দুই মাস ধরে দেশে বন্যা পরিস্থিতি চলছে। বর্তমানে বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে। তবে সহসাই যাচ্ছে না এ দুর্ভোগ। দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ প্রতিমন্ত্রী ডা. মো. এনামুর রহমান গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন, আগামী সেপ্টেম্বরের শেষে আবার বন্যা হতে পারে। একইসঙ্গে অক্টোবরে একটি বা দুটি ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাসও আছে। বন্যা নিয়ন্ত্রণে নেয়া হচ্ছে অনেক পদক্ষেপ। ফলে আগামী ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ একটি বন্যা সহনীয় রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
মঙ্গলবার ( ২৫ আগস্ট) আন্তঃমন্ত্রণালয় দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা সমন্বয় কমিটির সভা শেষে বন্যা পরবর্তী সার্বিক বিষয়ে জুমে সাংবাদিকদের ব্রিফিং করার সময় তিনি এ তথ্য জানান।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, ৯৮ বন্যার তুলনায় এবার বন্যার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ কম। ওই সময় প্রায় ৪০ জেলা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এবার ৩৩ জেলা। একইভাবে সে সময় প্রায় ৫০ ভাগ এলাকা প্লাবিত হয়, এবার প্লাবিত হয়েছে ৩০ ভাগ এলাকা। সেই সময় বন্যা স্থায়ী হয়েছিল ৬৯ দিন, এবার ৪৬ দিন।
দীর্ঘ মেয়াদি বন্যা থেকে পরিত্রাণ পেতে কী পদক্ষেপ নেয়া হচ্ছে জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী গণমাধ্যমকে বলেন, আমরা রিলিফ বেইজ জায়গা থেকে বের হয়ে দুর্যোগের ঝুঁকি কমাতে চেষ্টা করছি। এজন্য নদী শাসন, নদীভাঙন রোধে নানা প্রকল্প হাতে নেয়া হয়েছে। করা হয়েছে বেশ কিছু পরিকল্পনা।
তিনি বলেন, সুরমা, মাতামুহুরি নদী শাসনের ইতোমধ্যে প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। ভবিষ্যতে পদ্মা, যমুনা নদী শাসনেরও পদক্ষেপ নেওয়া হবে। এছাড়া প্রধানমন্ত্রীর নেওয়া ডেল্টা প্ল্যানেও অগ্রাধিকার দেয়া হয়েছে বন্যার বিষয়টি। ফলে আমরা অচিরেই একটি ভাল জায়গা যাবো। আগামী ১০ বছরের মধ্যে বাংলাদেশ একটি বন্যা সহনীয় রাষ্ট্রে পরিণত হবে।
প্রতিমন্ত্রী জানান, বর্তমানে আমাদের পর্যাপ্ত চাল মজুত আছে। প্রায় ১৩ লাখ মেট্রিক টনের মতো। ৮ লাখ হলেই আমাদের আর দরকার হয় না। তারপরও আমরা আরও মজুদের চেষ্টা করছি। তিনি জানান, করোনার কথা চিন্তা করে ঈদের আগে আমরা প্রায় ১ কোটি ৬ লাখ পরিবারকে চাল দিয়েছি। এছাড়া পর্যাপ্ত শুকনা খাবার, শিশু খাদ্য, ঢেউটিন সরবরাহ করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, এ পর্যন্ত বন্যাকবলিত জেলার সংখ্যা ৩৩, উপজেলার সংখ্যা ১৬৩ এবং ইউনিয়নের সংখ্যা এক হাজার ৭৩। পানিবন্দি পরিবারের সংখ্যা ১০ লাখ ১৭ হাজার ৯১৪ এবং ক্ষতিগ্রস্ত লোকসংখ্যা ৫৪ লাখ ৬০ হাজার ২৯১ জন। বন্যায় এ পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ৪১। বন্যাকবলিত জেলাসমূহে আশ্রয়কেন্দ্র খোলা হয়েছে এক হাজার ৪৩৭টি।আশ্রয়কেন্দ্রে আশ্রিত লোক সংখ্যা ৪৬ হাজার ১৫৭। আশ্রয়কেন্দ্রে আনা গবাদি পশুর সংখ্যা ৭০ হাজার ৭৯০টি। বন্যাকবলিত জেলাসমূহে মেডিকেল টিম গঠন করা হয়েছে ৮৮৬টি এবং বর্তমানে চালু আছে ৩২০টি।