ঢাকাসোমবার , ২০শে মে, ২০২৪ খ্রিস্টাব্দ
  1. অর্থনীতি
  2. আবহাওয়া
  3. আমাদের পরিবার
  4. আর্ন্তজাতিক
  5. ইসলামী জীবন
  6. এনায়েতপুর
  7. কক্সবাজার
  8. করোনা আপডেট
  9. খেলাধুলা
  10. চাকরি-বাকরি
  11. জাতীয়
  12. নাগরিক সংবাদ
  13. পাঁচমিশালি
  14. বরিশাল বিভাগ
  15. বাংলাদেশ
আজকের সর্বশেষ সবখবর

চলনবিলে কার্তিকের আকাল রুখে দিয়েছে আগাম জাতের ধান

যুগের কথা ডেস্ক
নভেম্বর ৫, ২০২১ ৮:১৮ অপরাহ্ণ
Link Copied!

যুগের কথা প্রতিবেদক : চলনবিলের মানুষের কাছে ‘কার্তিকের আকাল’ একটি চিরাচরিত পরিচিত শব্দ। যুগের পর যুগ কার্তিকের আকালে সাথে যুদ্ধ করে অভাব অনটনে সাথে দিনাতিপাত করেছেন এ জনপদের লাখো মানুষ। কিন্তু সে চিত্র আজ সম্পূর্ণ পাল্টে গেছে। স্বল্প মেয়াদী আগামজাতের ধান তাদের ঘরে এনেছে সুখের বারতা। এ জনপদে এখন প্রায় ১২ মাসই নতুন ধান উৎপাদন হয়। এ কারণে অঘ্রাণের নবান্নের উৎসবের জন্য তাদের কে আর অপেক্ষা করতে হয় না।

চলনবিল পরিচিতি: ইউকিপিডিয়ার তথ্য মতে, চলনবিল বাংলাদেশের উত্তরাঞ্চলের একটি বৃহৎ বিল। পাবনা, নাটোর ও সিরাজগঞ্জ জেলার ৯টি উপজেলা নিয়ে বৃহত্তর চলনবিলের বিস্তৃত। সাতচল্লিশটি নদী ও অন্যান্য জলপথ চলনবিলের মধ্যে দিয়ে প্রবাহিত হয়েছে। বিলটিতে পলিমাটি জমে, এর আকার সংকুচিত হয়ে আসছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের সূত্রসহ অন্যান্য সূত্র মতে, এ বিলে গত শতকের আশির দশকেও বছরে ছয় মাস পানি থাকত। বিলপাড়ের মানুষ নির্ভর করতেন এক ফসলের ওপর। দিন কাটতো খেয়ে না খেয়ে। কিন্তু জলবায়ু পরিবর্তন, নদী, খাল দখল, অপরিকল্পিত রাস্তাসহ অবকাঠামো নির্মাণের ফলে আজ চলনবিলের সে চিত্র সম্পূর্ণ গেছে পাল্টে। বর্ষা হয় স্বল্প মেয়াদী। যার ফলে বিলের অধিকাংশ একালায় পানি না থাকায় তিন ফসলের আওতায় এসেছে।

অতীত দিনের অভাবের চিত্র: সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলার তালম গ্রামে কৃষক মো. আবুল হোসেন অতীত স্মৃতিচারণ করে বলেন, আশির দশকেও কার্তিকের আকাল ছিল এক মূর্তিমান আতংক। মানুষ অভাবের তাড়নায় কতো অখাদ্য কুখাদ্য খেয়ে ডায়েরিয়া-কলেরায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। ঋণে পানে জর্জরিত ছিল সাধারণ মানুষ। আকালে পাখালে মানুষ কত যে কষ্ট করেছে তা বলে শেষ করা যাবে না।

একই কথা জানালেন, গুল্টা গ্রামের কৃষক সবুর হোসেন। তিনি বলেন, ভাতের ক্ষুধা যে কি জিনিস তা এ প্রজন্মের মানুষ বুঝবে না। ক্ষুধা আর দারিদ্রতার সাথে লড়াই করতে কত যে রোগশোকে মানুষ ভুগেছেন, অকাল মৃত্যুবরণ করেছেন তার কোনো হিসেব নেই।
যেভাবে পাল্টে গেছে অভাবী জনপদ: সরেজমিনে তাড়াশ ও সিংড়া উপজেলায় ঘুরে দেখা যায়, মাঠে মাঠে হেমন্তের সোনালি ফসল। ব্রি উদ্ভাবিত উচ্চ ফলনশীল বিভিন্ন জাতসহ স্থানীয় কয়েকটি স্বল্প মেয়াদী জাত অঘ্রাণের পরিবর্তে কার্তিকের শুরুতেই ঘরে তুলছেন কৃষক। তাদের ঘর থেকে বিদায় নিয়েছে আজ কার্তিকের আকাল।

এক সময় অঘ্রাণ মাসে কৃষকের ঘরে আসতো কম ফলনশীল বোনা আমন। শত অভাবের মাঝেও কৃষকের ঘর মেতে উঠতো নবান্নের উৎসবে। এখন নবান্নের উৎসব না হলেও আগামজাতের ধান তাদেরকে কার্তিকের আকাল থেকে মুক্তি দিয়েছে।
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সূত্র জানায়, রোপা মৌসুমে আগাম জাতের বিনা ধান-৭, বিনা ধান- ১৭,ব্রি-ধান-৪৯, ব্রি-৭১, ব্রি ধান ৭৫ ও ব্রি-ধান ৩৪, কাঁটারি ও স্থানীয়জাত আব্দুলগুটির জীবনকাল স্বল্প মেয়াদী ও উচ্চ ফলনশীল হওয়ায় চলনবিলের কৃষকের ঘর থেকে বিদায় দিয়েছে কার্তিকের আকাল।

এ সব উচ্চ ফলনশীল ধান ১১৫ থেকে ১২০ এবং ১৩০ থেকে ১৪০ দিনের মধ্যেই কর্তন করা যায়। ফলন হয় গড়ে ১৮ থেকে ২০ মন হারে।
আগের দিনে জমিতে তেমন ফলন না হলেও এখন তারা বিঘা প্রতি ১৫/২০ মণ হারে ধান উৎপাদন করতে পারছেন। তবে পোকার আক্রমণ, সার বীজের দাম বৃদ্ধিসহ কৃষিযান্ত্রিকী কারণে উৎপাদন খরচ অনেকটা বেরে গেছে। তারপরও তাদেরকে যে আর অভাবের সাথে লড়াই করতে হয় না, এটাই এখন সুখের কথা।

সিরাজগঞ্জের তাড়াশ উপজেলা কৃষিকর্তা অফিসার লুৎফুন নাহার লুনা বলেন, এ বছর বন্যা স্বল্প মেয়াদী হওয়ায় এবং আবহাওয়া অনুকূল থাকায় ফলন হয়েছে আশানুরুপ। অতীতে এ সময়টায় এ এলাকায় কার্তিকের আকালে মানুষ অভাবে দিন কাটাতো। এখন আগামজাতের উচ্চ ফলনশীল ধানের আবাদ করায় কার্তিকের আকাল নিয়েছে বিদায়।

এই সাইটে নিজম্ব নিউজ তৈরির পাশাপাশি বিভিন্ন নিউজ সাইট থেকে খবর সংগ্রহ করে সংশ্লিষ্ট সূত্রসহ প্রকাশ করে থাকি। তাই কোন খবর নিয়ে আপত্তি বা অভিযোগ থাকলে সংশ্লিষ্ট নিউজ সাইটের কর্তৃপক্ষের সাথে যোগাযোগ করার অনুরোধ রইলো।বিনা অনুমতিতে এই সাইটের সংবাদ, আলোকচিত্র অডিও ও ভিডিও ব্যবহার করা বেআইনি।